সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

সব ধরনের সুদ নিষিদ্ধ ইসলামে

মাওলানা মুহম্মাদ আশরাফ আলী

সুদ শোষণের হাতিয়ার। ইসলামে সব ধরনের সুদ নিষিদ্ধ। ইসলামের আগে ইহুদি ও ইশায়ী বিধানেও সুদ নিষিদ্ধ ছিল। পবিত্র কোরআনের বেশ কিছু সূরায় সুদের বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে এবং তা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুদখোরদের পরিণতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘যারা সুদ খায়, তারা তার মতো করে উঠবে (কবর থেকে), যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল বানিয়ে দেয়। এটা এ জন্যই যে, তারা বলে বেচাকেনা সুদের মতোই। অথচ আল্লাহ ব্যবসা হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতএব, যার কাছে তার রবের পক্ষ থেকে উপদেশ আসার পর সে বিরত হলো, যা গত হয়েছে তা তার জন্য ইচ্ছাধীন। আর তার ব্যাপারটি আল্লাহর হাওয়ালা। আর যারা ফিরে গেল, তারা আগুনের অধিবাসী— জাহান্নামি। তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে।’ (সূরা বাকারা ২৭৫)

সুদ সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে। শোষিত মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। যে কারণে ইসলাম সুদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এ জুলুম থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। সুদের মাধ্যমে সমাজের অভাবী মানুষের ওপর জুলুম করার বদলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জাকাত দিয়ে তাকে সহায়তা করার নির্দেশ দিয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চার ধরনের লোকের ওপর অভিসম্পাদ করেছেন। তারা হলো সুদখোর, সুদদাতা, সুদের হিসাব রক্ষক ও সুদের সাক্ষী (বুখারি মুসলিম)। উপরোক্ত হাদিসে সুদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার ব্যাপারেই ইসলামের কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে। সুদকে ব্যভিচারের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে। ইরশাদ করা হয়েছে, ‘সুদিপন্থায় এক দেহরাম আয় করা আল্লাহর কাছে মুসলমান হয়েও ৩৩ বার ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার চেয়েও জঘন্য।’ (তাবারানি) হজরত আবু হুরাইয়রা বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সাতটি ধ্বংসাত্মক জিনিস থেকে তোমরা বেঁচে থাক। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ ওই সাতটি জিনিস কী? রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সেগুলো হলো— ১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা। ২.জাদু করা। ৩. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা। ৪. সুদ খাওয়া। ৫. এতিমের মাল আত্মসাৎ করা। ৬. যুদ্ধের ময়দান থেকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করা। ৭. সতী-সাধবী অবলা মুসলিম নারীদের ওপর অপবাদ আরোপ করা। (বুখারি, মুসলিম) আল্লাহ আমাদের, সবাইকে সুদ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর