বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইয়াবা রোধে মৃত্যুদণ্ড

মাদক নেশা থেকে রক্ষা পাক দেশ

মাদক নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর আইন প্রণয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যে ইয়াবাকে ‘ক’ শ্রেণির মাদক হিসেবে চিহ্নিত করে এ মাদকের পাচার, ব্যবসা ও বিপণনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে প্রচলিত আইন সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। স্মর্তব্য, মাদক নিয়ন্ত্রণে ১৯৯০ সালে প্রণীত আইনটি সময়োপযোগী করার জন্য এ সংশোধনী আনা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে আইনের সংশোধনীটি পাস হলে তা মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভয় ঢুকাতে সক্ষম হবে। স্বীকার করতেই হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযান সত্ত্বেও মাদকের আগ্রাসী থাবা বন্ধ হচ্ছে না। মাদক আমদানি, সরবরাহ ও বিপণন ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন রাখতে প্রতিনিয়তই তারা কৌশল পাল্টাচ্ছে। নিত্যনতুন কৌশলে পাচার হওয়া মাদক ধরতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মাদক আগ্রাসন দেশের যুবসমাজের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলছে। ইয়াবাসহ মাদকের থাবা প্রতিহত করতে সরকারি উদ্যোগের দৃশ্যত অভাব না থাকলেও এ আগ্রাসন কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। মাদক ব্যবসার সঙ্গে রাজনৈতিক সাইনবোর্ড ব্যবহারকারী ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সম্পর্ক থাকায় তারা যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ পাচ্ছে। অভিযোগ করা হয়, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে, উপজেলা চেয়ারম্যান এমনকি কোনো কোনো সংসদ সদস্যের সঙ্গে রয়েছে মাদক ব্যবসার সম্পর্ক। আশির দশকে এদেশে হেরোইনের আগ্রাসন ঘটে। ওই দশকের শেষ দিকে ফেনসিডিল মাদক রাজ্যের পরিচালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। নব্বই দশকের শেষদিকে ইয়াবার আগমন ঘটে মাদকরাজ্যে। এখন ইয়াবার থাবায় আক্রান্ত দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকা। রাজধানীর অভিজাত তরুণ-তরুণীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ইয়াবায় আসক্ত। এ নেশার অর্থ জোগাতে তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে। তরুণীদের কেউ কেউ দেহপসারিণী হয়ে জোগাচ্ছে মাদক কেনার অর্থ। মাদকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বলে বিবেচিত ইয়াবা। এ মাদক নেশায় তাত্ক্ষণিকভাবে হৃত্স্পন্দন, রক্তচাপ ও শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কের কিছু কোষের অপমৃত্যু ঘটে। এভাবেই হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুস ও কিডনি বিকলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ইয়াবা আসক্তরা। ইয়াবা রোধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান এই ভয়াবহ মাদকের বিস্তার রোধে ভূমিকা রাখবে আমরা এমনটিই আশা করতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর