শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

তিন সিটির নাগরিক সমস্যা

সমাধানে চাই সমন্বিত উদ্যোগ

জলাবদ্ধতা ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রামের তিন মেয়রকে অসহায় অবস্থায় ফেলেছে। জলাবদ্ধতার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে তাদের সুনাম। রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার ব্যাপারে তিন মেয়রের সক্রিয়তা নিয়ে সন্দেহের তেমন অবকাশ নেই। দেশের তিন শীর্ষ সিটিকে মানুষের বাসযোগ্য করে তোলার ক্ষেত্রে তাদের প্রয়াস রাজনৈতিকভাবে যারা ভিন্ন শিবিরে অবস্থান করছেন তাদের কাছ থেকেও সমীহ পেয়েছে। কিন্তু জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে এ যাবৎ দৃষ্টিগ্রাহ্য কিছু করতে না পারার ব্যর্থতা তিন মেয়রের জন্যই বিড়ম্বনা ডেকে এনেছে। কয়েক দশকের বর্জ্য অপরিকল্পনা, অচল ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পানি অপসারণের প্রাকৃতিক খাল ও অন্যান্য জলাশয় অপদখলের শিকার হয়ে ভরাট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যায় জলাবদ্ধতা তিন মহানগরীর নিয়তির লিখনে পরিণত হয়েছে। রাজধানীর নাগরিকসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় না থাকায় বিদ্যমান জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ছে। তিন মেয়রের জন্য ‘মড়ার উপর  খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে প্রাকৃতিক বৈরী আচরণ তথা জলবায়ু পরিবর্তনের ঘটনা। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে গেছে। তিন মহানগরীতেই গত দুই বছরে ড্রেনেজ ব্যবস্থার কিছুটা হলেও যে উন্নতি ঘটেছে তা যেমন সত্যি, তেমন আরেকটি সত্যি হলো— প্রাকৃতিক খাল ও অন্যান্য জলাশয়ের বেশির ভাগ অপদখল মুক্ত না হওয়ায় পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেনি। ড্রেনেজ ব্যবস্থার দায়িত্বে নিয়োজিত ওয়াসার অযোগ্যতা ও সীমাহীন দুর্নীতি জলাবদ্ধতা সমস্যাকে টিকিয়ে রেখেছে স্থায়ীভাবে। তিন সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে সমন্বিত পদক্ষেপের কোনো বিকল্প নেই। তা নিশ্চিত করতে জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সব নাগরিক সমস্যার সমাধানের মূল দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতে অর্পণের ব্যবস্থা করতে হবে। নাগরিকদের প্রতি দায়দায়িত্বহীন প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজ আমলা ও কর্মচারীদের হাতে নাগরিক সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব থাকলে তা হবে সমস্যা টিকিয়ে রাখার নামান্তর। এ উদ্দেশ্যে সিটি করপোরেশনের সব সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে এক ছাতার নিচে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।  সিটি করপোরেশনকে নগর সরকারে পরিণত করার বাস্তবসম্মত পথের কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর