বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ রবিবার চলতি বছরের জন্য ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা পূরণকে সরকার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে সংযমী হওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। রপ্তানির চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেশি। আর প্রকৃত রপ্তানির চেয়ে লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ ৩০০ কোটি ২২ লাখ ডলার বেশি। গত বছর রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। চলতি বছর প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গত বছর ইউরো ও ব্রিটিশ পাউন্ডের দাম পড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ওপর ধকল পড়েছে। আশা করা হচ্ছে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছর রপ্তানি আয় ৪ বিলিয়নের কোটায় উন্নীত করা যাবে; যা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। সন্দেহ নেই দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিনিয়ত তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হচ্ছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনামের কাছ থেকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বিশেষ পণ্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। ব্যবসাবান্ধব কূটনীতির অভাব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছে। রবিবার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণাকালে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, কানাডার অটোয়া, বেলজিয়ামের ব্রাসেলস ও অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা— এই পাঁচ মিশন গত অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। বাণিজ্যিক উইংগুলোর ব্যর্থতাও রপ্তানি আয়ে প্রতিক্রিয়া রেখেছে। রপ্তানি আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্যবান্ধব কূটনীতির প্রসার যেমন ঘটাতে হবে তেমন ব্যবসার প্রতিবন্ধকতা দূর করার দিকেও নজর দিতে হবে। রপ্তানি বহুমুখীকরণের উদ্যোগও জোরদার করা দরকার। রপ্তানির ক্ষেত্রে দেশের ব্যবসায়ীরা কী কী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তার সমাধানের দিকেও নজর দিতে হবে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকার বিষয়টিও প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার।