রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা

দুর্বৃত্ত পোষার রাজনীতি কাম্য নয়

দেশে হত্যা ও ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পুলিশের ত্রৈমাসিক অপরাধ সভায়ও এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বৈঠকে বলা হয়, এপ্রিল, মে, জুন এই তিন মাসে সারা দেশে ৯৫০ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১১০৯টি। অর্থাৎ এ সময়ে প্রতিদিন হত্যার শিকার হয়েছে ১০ জন, ধর্ষণের ঘটনা ১২টি। দেশে প্রতিদিন যে অপরাধ সংঘটিত হয় তার একাংশই কেবল আইন আদালতের আওতায় আসে। খুনের ঘটনার সিংহভাগ থানা পুলিশের গোচরে এলেও ধর্ষণের মতো অপরাধের সিংহভাগই গোপন থাকে লোকলজ্জার ভয়ে। এ বিবেচনায় তিন মাসে ১১০৯টি ধর্ষণের ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। মানুষ নামের নরপশুদের দাপট কীভাবে বাড়ছে বগুড়ায় এক তথাকথিত শ্রমিক নেতার দ্বারা কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা তারই প্রমাণ। এ অপকর্মের বিচার চাওয়ায় দাপটশালী শ্রমিক নেতার স্ত্রী ও শ্যালিকা ধর্ষিত কিশোরী ও তার মাকে শালিসের নামে ডেকে এনে বেধড়ক মারপিট করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি তাদের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে অপমানিত করার ধৃষ্টতাও দেখিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় দেশজুড়ে যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তা ক্ষমতাসীন দলকেও নাড়িয়ে দিয়েছে। তারা নিজেদের পিঠ রক্ষায় মাদক ব্যবসার হোতা কথিত শ্রমিক নেতা, তার ভাই কথিত যুব নেতা এবং বগুড়া পৌরসভার একজন বিতর্কিত মহিলা কাউন্সিলরকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। এ পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার হলেও যারা ধর্ষক ও মাদক ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক সাইনবোর্ড ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সেসব অর্বাচীন নেতার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সে বিষয়টি অমীমাংসিত থেকে গেছে। প্রচলিত প্রবাদ অনুযায়ী সাপ পুষলে সাপের ফণায় জীবন দিতে হয়।  দেশের আইনশৃঙ্খলার সর্বনাশ না চাইলে রাজনৈতিক নেতাদের দুর্বৃত্ত পোষার প্রবণতায় বাদ সাধতে হবে।  বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলে যাতে এসব সামাজিক শত্রুরা কোনোভাবে ঠাঁই না পায় সে ব্যাপারে নিজেদের স্বার্থেই সতর্ক হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর