শিরোনাম
সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
বিচিত্রিতা

৪ কোটি মানুষকে খুন করেছিলেন চেঙ্গিস

চেঙ্গিস খানের রাজ্য জয় করার পদ্ধতি ছিল ভয়াবহ রকমের বীভৎস। কোনো শহর জয়ের আগে সে শহরের মানুষদের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আদেশ করা হতো। সেটা না মেনে নিলে শুরু হতো অবরোধ, তারপর এক সময় অনাহারক্লিষ্ট নগরবাসীর ওপর চালানো হতো অতর্কিত হামলা। নারী, পুরুষ, শিশু কেউই মোঙ্গল বাহিনীর বর্বরতা থেকে বাঁচতে পারেনি। মারভ, বেইজিং, সমরখন্দের মতো মধ্যযুগের জনবহুল শহরগুলো মোঙ্গল বাহিনীর পাশবিকতায় একদম মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। বর্তমান তুর্কমেনিস্তানের উরগেঞ্জ ছিল মধ্যযুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর একটি। সেটিও মোঙ্গল বাহিনী পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলে। প্রায় ১২ লাখ মানুষের এই শহর জয় করার সময় চেঙ্গিসের বাহিনীর ৫০ হাজার সৈনিকের প্রত্যেককে গড়ে ২৪ জন করে নিরীহ মানুষ হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। মোঙ্গল বাহিনী যেসব এলাকায় হামলা চালাত সেগুলো হয়ে পড়ত জনশূন্য। হাজার হাজার বর্গমাইল জুড়ে বিস্তৃত সভ্যতা পরিণত হতো ভুতুড়ে নগরীতে। আজও সেন্ট্রাল এশিয়ার বেশ কিছু শহরের ধ্বংসাবশেষ টিকে আছে মোঙ্গল আক্রমণের ভয়াবহতার সাক্ষী হিসেবে। ধারণা করা হয় চেঙ্গিস খানের বিভিন্ন অভিযানে মারা পড়েছিল প্রায় ৪ কোটির মতো সাধারণ মানুষ যা তৎকালীন পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ১১ শতাংশ। দূরপ্রাচ্যের সবচেয়ে ঐশ্বর্যমণ্ডিত বেইজিং শহর যাকে চেঙ্গিস ধুলায় মিশিয়ে দিয়ে ছিলেন। চেঙ্গিস খানের জীবন কাহিনী নিয়ে এত কিছু জানার পর একটি প্রশ্ন সবার মনে আসতে বাধ্য ‘মানব ইতিহাসে চেঙ্গিসের স্থান তাহলে কোথায়?’

প্রশ্নটির উত্তর বোধ হয় এত সহজ নয়। কোটি কোটি নিরীহ মানুষের হত্যাকারী এক যুদ্ধবাজ বর্বর জেনারেলকে আপনি নিছক ঘাতক হিসেবে ইতিহাসে স্থান দিতে পারবেন না। কারণ চেঙ্গিসের উত্থান পাল্টে দিয়েছিল পৃথিবীর চেহারা সূচনা করেছিল নতুন এক অধ্যায়ের। তাই যতই ধিক্কার জানানো হোক চেঙ্গিস খানের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে কেউই অস্বীকার করতে পারবে না। আর সে জন্যই চেঙ্গিস পৃথিবীর ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন ধ্বংস ও রক্ত পাতের এক ভয়াল প্রতিশব্দ হিসেবে। তবে মোঙ্গলদের কাছে এখনো তিনি দেবতুল্য। চেঙ্গিস খানকে নিয়ে এখনো তারা গর্ব করে। চেঙ্গিস এখনো তাদের কাছে একটি অনুপ্রেরণার নাম।

সর্বশেষ খবর