সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

চালের বাজারে অস্থিরতা

মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানোর উদ্যোগ নিন

বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি সত্ত্বেও চালের বাজারে এর সুফল অনুভূত হচ্ছে না। ঠেকানো হচ্ছে না মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা। বিদেশ থেকে চাল আমদানি মোটা চালের মূল্যবৃদ্ধির ঊর্ধ্বগতি থামাতে সক্ষম হলেও চিকন চালের বাজারে কোনো সুখবর সৃষ্টি করেনি। গত এক সপ্তাহে প্রতি কেজি চিকন চালের দাম বেড়েছে ৫০ পয়সা থেকে দুই টাকা। দুটি কারণে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত চিকন চালের মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরানো যাচ্ছে না। প্রথমত, বিদেশ থেকে যে চাল আমদানি করা হচ্ছে তা মোটা অথবা আতপ চাল। দ্বিতীয়ত, বর্ষা মৌসুমের জটিলতা। বর্ষা মৌসুমে ধান শুকানোসহ প্রক্রিয়াজাতকরণে নানা সমস্যা দেখা দেয়। ফলে চালকল থেকে ব্যবসায়ীদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী চাল সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীদের মতে, ভারত ও অন্যান্য দেশে চিকন চালের দাম বেশি হওয়ায় আমদানিকারকরা লোকসানের ভয়ে তা আমদানি করছে না। ফলে চিকন চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। সরকারি হিসাব মতে, দেশে বছরে প্রায় তিন কোটি টন চাল উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে সিংহভাগ ১ কোটি ৯০ লাখ টন আসে বোরো থেকে। হাওর এলাকাসহ সারা দেশে বন্যায় বোরো উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পাওয়ায় তা চালের মূল্যবৃদ্ধিতে মদদ জুগিয়েছে। চাল আমদানিতে সরকার আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনলেও চিকন চালের বাজারে তার প্রতিক্রিয়া পড়েনি। চিকন চালের বাজারে সবচেয়ে বেশি চাহিদা মিনিকেট ও নাজিরশাইলের। এ দুটি চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের জীবনমানের ওপর তা প্রভাব রাখছে। সবজির দাম বর্ষার কারণে সাধারণ সময়ের চেয়ে তিনগুণ হওয়ায় সাধারণ মানুষ যখন হিমশিম খাচ্ছে, চালের মূল্য বৃদ্ধি ভোগান্তিকে আরও জটিল করে তুলছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে মোটা চালের পাশাপাশি চিকন চাল আমদানির দিকেও নজর দেওয়া দরকার। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়তে শুল্ক আরও হ্রাস করার কথা ভাবা যেতে পারে। চাল দেশের প্রধান খাদ্য এবং তা অন্য সব খাদ্য পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। এ বিষয়টি মনে রেখে নির্বাচনের দেড় বছর আগে স্পর্শকাতর সময়ে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে নজর দিতে হবে। বাজারে চালের সরবরাহ বাড়াতে সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগও নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর