সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

গণপরিবহন নৈরাজ্য

শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে হবে

গণপরিবহন নৈরাজ্য যেন নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা ইচ্ছে তাই করার অবাধ স্বাধীনতায় ভুগছে তারা। রাজধানীর নর্দা থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার না হলেও এর জন্য যাত্রীদের গুনতে হয় ২৫ টাকা । মিরপুরের কালশী সড়কের মাটিকাটা অংশে ইসিবি চত্বর থেকে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের দূরত্ব মাত্র ১ কিলোমিটার, যার সর্বোচ্চ ভাড়া হওয়ার কথা ৫ টাকা— অথচ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ২৫ টাকা। সিটিং সার্ভিসের নামে এভাবেই যাত্রীদের কাছ থেকে গলাকাটা ভাড়া আদায় করছে গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিকরা। স্মর্তব্য, সিটিং সার্ভিসের নামে যাত্রীদের সঙ্গে যথেচ্ছ আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সিটিং সার্ভিস বন্ধের নির্দেশনা দেয়। বিআরটিএ’র এ পদক্ষেপ নস্যাৎ করতে বাস মালিক ও শ্রমিকরা রাস্তায় বাসের সংখ্যা কমিয়ে দেয়। বিআরটিএ যাতে তাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে বাধ্য হয় সে উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে সংকট সৃষ্টি করা হয়। এ প্রেক্ষাপটে প্রত্যাহার করা হয় সিটিং সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে গণপরিবহনের নৈরাজ্য বন্ধ এবং সিটিং সার্ভিসে শৃঙ্খলা আনতে ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তিন মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন বিআরটিএর কাছে জমা দিতে বলা হয়। কমিটি তাদের প্রতিবেদন এখনো সম্পন্ন করতে না পারলেও ইতিমধ্যে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনা এবং সিটিং সার্ভিসের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় ১০ দফা সুপারিশ পেশ করেছে। এ সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, সিটিং ও নন সিটিং গাড়ির রং আলাদা করা, এর ফলে যাত্রীরা দূর থেকেই কোনটি সিটিং কোনটি নন সিটিং তা বুঝতে সক্ষম হবে। সিটিং সার্ভিসের ভাড়া ও আলাদা স্টপেজ নির্ধারণ করে দেওয়া। গণপরিবহনগুলো যাতে শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করে তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো, যাতে কেউ অপরাধ করলে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় ইত্যাদি। গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হলে যাত্রীবান্ধব পরিবেশ যেমন সৃষ্টি হবে তেমন রাজধানীর যানজট সমস্যা কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে। রাজধানীতে যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ হলো যেখানে সেখানো বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানোর প্রবণতা। আমরা আশা করব গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় গঠিত কমিটির প্রতিবেদন পরিবহন নৈরাজ্যের অবসানে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর