মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাইবার অপরাধ

অপরাধীদের ছাই দিয়ে ধরতে হবে

দেশে সাইবার অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে। আগ্রাসী চেহারায় আবির্ভূত হচ্ছে অপরাধীরা। সাইবার অপরাধের বিচারে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের শুরু। প্রথম বছরে ট্রাইব্যুনালে মামলা ছিল ৩টি। পরের বছর ২০১৪ সালে মামলা আসে ৩২টি। ২০১৫ সালে ১৫২, ২০১৬ সালে ২৩৩টি। সর্বশেষ চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত আসা ৩৬৬টি মামলা নিয়ে ট্রাইব্যুনালে মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮৬-তে। এসব মামলার মধ্যে ২২২টি নিষ্পত্তি হয়েছে এবং বিচারাধীন রয়েছে ৫৬৫টি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে চার বছরে সাইবার আইনে মামলার সংখ্যা বেড়েছে ২৬২ গুণ। সোজা কথায়, জ্যামিতিক হারে বাড়ছে সাইবার মামলা। সাইবার অপরাধের প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ। অপরাধের শিকার, ভুক্তভোগীর মাত্র ৩০ শতাংশ মামলার আশ্রয় নেন। সাইবার অপরাধীরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থারও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাইবার অপরাধের তুলনায় মামলার সংখ্যা যে অনেক কম তা ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকেও স্বীকার করা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা মামলা করতে অনীহা প্রকাশ করেন অথবা নিজেরাই সমঝোতা করে নেন। পর্নোগ্রাফি, ফেসবুক হ্যাকিং, অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার— এসব নিয়েই সাধারণত সাইবার অপরাধের অভিযোগগুলো আসে। এক জরিপে বলা হয়েছে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নারীর মধ্যে ৭৭ শতাংশই ফেসবুককেন্দ্রিক সাইবার অপরাধের শিকার। পাসওয়ার্ড হ্যাকিংয়ের শিকার ১২ শতাংশ নারী। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নারীর মধ্যে ৪ শতাংশ ই-মেইল ও এসএমএসে হুমকির সম্মুখীন হন। সাইবার পর্নোগ্রাফির শিকার হন ২ শতাংশ নারী এবং ৫ শতাংশ আইডেনটিটি থেফটের শিকার। তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার পর ইন্টারনেট ব্যবহারকে ষষ্ঠ অধিকার হিসেবে অভিহিত করেছেন। বলেছেন ইন্টারনেট ব্যবহারে নিজের প্রয়োজনেই সতর্ক থাকতে হবে। পানি পানের সময় যেমন ফুটিয়ে পান করতে হয় তেমন ইন্টারনেট ব্যবহারের ঝুঁকি এড়াতেও সতর্ক থাকতে হবে। অ্যান্টি ভাইরাস ব্যবহার, সিস্টেম আপডেট, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দেওয়া, ডাউনলোডের আগে অ্যাপস ভেরিফাই করা ইত্যাদি ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সন্দেহ নেই, দুনিয়ার সব দেশে সাইবার অপরাধ বাড়ছে, বাংলাদেশও তা থেকে মুক্ত নয়। এ ধরনের অপরাধে যারা জড়িত তাদের ছাই দিয়ে ধরারও উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর