শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

উধাও হচ্ছে রাজধানীর খাল

জলাধার রক্ষার উদ্যোগ নিন

রাজধানী থেকে একের পর এক খাল ও প্রাকৃতিক জলাধার উধাও হয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে প্রভাবশালীদের কারসাজি। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার খালগুলো এখন স্থানীয় প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীনদের কব্জায়। তারা খালগুলো ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করে সেখানে বিভিন্ন ব্যবসা কেন্দ্র বসিয়েছেন। ইতিমধ্যে দখলদারদের ২০০ জনের বেশি একটি তালিকা তৈরি করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। তালিকা তৈরির প্রায় আট মাস পরও দু-একটি খাল ছাড়া বেশির ভাগই এখনো বেদখলে রয়ে গেছে। জেলা প্রশাসনের তালিকায় চিহ্নিত করা হয়েছে ১৫৪ জন অবৈধ দখলদার নন্দীপাড়া-ত্রিমোহনী খালটির এক পাশ ভরাট করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। ঘোপদক্ষিণ খালেরও এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। শাহবাগ থেকে বেগুনবাড়ী খালের সঙ্গে সংযোগ থাকা পরীবাগ খালটি এখন কালভার্ট হিসেবে আছে। ধানমন্ডি সার্কেলে রামচন্দ্রপুরের বিভিন্ন খাল দখলে রেখেছেন খালখেকো প্রভাবশালীরা।

রাজধানীর অন্যসব খাল ও জলাশয় দখলের ক্ষেত্রেও এলাকার মস্তান নামধারী কিংবা রাজনৈতিক টাউটদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। গত ৩২ বছরে ঢাকা মহানগরী থেকে উধাও হয়ে গেছে ৩৯টি খাল। রাজধানীতে এই মুহূর্তে ১৫টি খাল থাকলেও এর ৪টি লেক হিসেবে টিকে আছে। অন্যগুলো ভরাট-দখলে সংকুচিত হয়ে নর্দমার আকৃতি পেয়েছে। ঢাকা ওয়াসার হিসাবেই নগরীতে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ৫৪টি খালের অস্তিত্ব ছিল। এসব খালের সংযোগ ছিল রাজধানী লাগোয়া প্রধান চারটি নদ-নদীর সঙ্গে। রাজধানীর এসব খাল ও অন্যান্য জলাশয় এখন বিস্মৃত অতীত মাত্র। খাল-বিল-জলাশয় যথেচ্ছভাবে দখলের পরিণতিতে বর্ষা হলেই রাজধানীতে জলাবদ্ধতার অভিশাপ নেমে আসে। প্রাকৃতিক জলাশয়ের যে সামান্য অংশ টিকে আছে তা দখল ও দূষণের কারণে স্বাভাবিক অবস্থা হারিয়েছে বহু আগেই এবং তা মশক উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে রাজধানীতে জলাবদ্ধতার অস্বস্তিকর থাবা নাগরিকদের বুঝিয়ে দিয়েছে খালসহ প্রাকৃতিক জলাশয়ের বিলুপ্তি তাদের জন্য কী অভিশাপ সৃষ্টি করছে। জলাবদ্ধতার অবসান শুধু নয়, রাজধানীতে শ্বাস নেওয়ার মতো পরিবেশ বজায় রাখতে দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো উদ্ধার ও তা পুনঃখননের উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর