অনর্থক হত্যাকাণ্ড পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে বারবার বিপর্যয় ডেকে এনেছে। ইসলামের তিন মহান খলিফা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। রসুল (সা.)-এর দুই দৌহিত্র হজরত হাসান ও হোসেন (রা.)-কে প্রাণ হারাতে হয়েছে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে। ইসলামী অনুশাসন অনুযায়ী প্রতিটি মুসলমানের উচিত ষড়যন্ত্র ও হত্যার অপচর্চা থেকে দূরে থাকা। পবিত্র কোরআনের সূরা আননিসার ৯৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন, ‘যে লোক ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো বিশ্বাসী মুমিনকে খুন করবে, তার পরিণাম হবে চিরকালীন দোজখবাস। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হন, তাকে অভিশাপ দেন এবং তার জন্য ভয়ঙ্কর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। সূরা আল মায়েদার ৩২ নম্বর আয়াতে আল্লাহপাক ঘোষণা করেন, ‘এ কারণেই আমি বনি ইসরাইলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে কেউ কোনো হত্যার বিনিময়ে অথবা পৃথিবীতে গোলযোগ সৃষ্টি করার অপরাধ ছাড়া কাউকে হত্যা করল, সে যেন সমগ্র মানবকুলকে হত্যা করল, আর যে কারও জীবন বাঁচাল সে যেন সমগ্র মানবকুলের জীবন বাঁচাল।’

রসুল (সা.) বলেছেন, কোনো মুসলমানের হত্যাকাণ্ড আল্লাহর কাছে সারা দুনিয়া ধ্বংসের চেয়েও অধিক মারাত্মক। তিনি বলেছেন, আল্লাহর সঙ্গে কারও শরিক করা ও মানুষ হত্যা হলো জঘন্য কবিরা গুনাহ।

যারা হত্যা এবং ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় তাদের পরিণাম সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাদের শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। হত্যা ও ষড়যন্ত্রের কুশীলবদের পরিণাম কখনো ভালো হওয়ার কথা নয়। আমাদের এই যুগে যারা এ ধরনের গর্হিত কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের পরিণতি দেখলে স্পষ্ট হয় আল্লাহর বিধান কতটা অলঙ্ঘনীয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে অসত্য পথ থেকে দূরে থাকতে এবং শান্তি ও কল্যাণের পথে চলার তৌফিক দিন। হত্যা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছেন দেশ ও জাতির সেসব সুসন্তানকে আল্লাহ জান্নাতবাসী করুন। আমিন।

            লেখক :  ইসলামী গবেষক।