মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

ষড়যন্ত্র হানাহানি ও রক্তপাতের পরিণাম জাহান্নাম

মোহাম্মদ ওমর ফারুক

ষড়যন্ত্র হানাহানি ও রক্তপাতের পরিণাম জাহান্নাম

ইসলাম ষড়যন্ত্র, হানাহানি ও অকারণে হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে। দুনিয়ার প্রথম হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল হজরত আদম (আ.)-এর সময়ে। তার পুত্র কাবিল ভাই হাবিলকে হত্যা করেছিল হিংসাশ্রয়ী মনোভাব নিয়ে।  হিংসাশ্রয়ী মনোভাব যুগে যুগে বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে। ইসলামের চার খলিফার তিনজন হজরত ওমর (রা.), হজরত উসমান (রা.) এবং হজরত আলী (রা.) প্রাণ হারিয়েছেন হিংসাশ্রয়ী অপশক্তির হাতে। রসুল (সা.)-এর দুই প্রিয় নাতি ইমাম হাসান (রা.) ও ইমাম হোসেন (রা.) নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। ক্ষমতালোভী পাপিষ্ঠ ইয়াজিদ চক্রের হাতে তাদের প্রাণ হারাতে হয়। মুসলিম বিশ্বের সাম্প্রতিক ইতিহাসেও ক্ষমতালিপ্সার কারণে অসংখ্য হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আমাদের জাতীয় জীবনেও ষড়যন্ত্র, হানাহানি ও অকারণ হত্যাকাণ্ড ট্র্যাজেডি সৃষ্টি করেছে। হানাহানি ও অকারণ রক্তপাত মানব সমাজে বিভক্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে। যে কারণে ইসলামী অনুশাসনে হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনের সূরা মায়েদার ৩২ নম্বর আয়াতে অকারণে হত্যাকাণ্ডকে সমগ্র মানব জাতিকে হত্যা করার অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সূরা নিছার ৯৯ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত কোনো মুসলমানকে হত্যা করে তার শাস্তি জাহান্নাম তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। ইসলামে হত্যাকাণ্ডকে কবিরা গুনাহ ঘোষণা করে এ পাপকাণ্ডে জড়িত হওয়ার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি এবং মানুষের জীবন রক্ষায় অবদান রাখার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সূরা আল মায়েদার ৩২নং আয়াতে আল্লাহপাক ঘোষণা করেন, ‘এ কারণেই আমি বনি ইসরাইলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে কেউ কোনো হত্যার বিনিময়ে অথবা পৃথিবীতে গোলযোগ সৃষ্টি করার অপরাধ ছাড়া কাউকে হত্যা করল, সে যেন সমগ্র মানবকুলকে হত্যা করল, আর যে কারও জীবন বাঁচাল সে যেন সমগ্র মানবকুলের জীবন বাঁচাল।’ ইসলাম এমনই এক জীবন বিধান যেখানে সর্বক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিন ব্যক্তি সর্বাধিক ঘৃণিত ১. যে ব্যক্তি মক্কার হেরেমে নিষিদ্ধ বা গুনাহর কাজ করে ২. যে ব্যক্তি ইসলামে জাহেলি রাজনীতি কামনা করে এবং ৩. যে ব্যক্তি অবৈধ রক্তপাতের মানসে কোনো মুসলমানের রক্ত দাবি করে (বুখারি থেকে মিশকাতে)

আল্লাহ আমাদের সবাইকে ষড়যন্ত্র, হানাহানি ও রক্তপাত থেকে দূরে থাকার তৌফিক দান করুন।

            লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর