বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

কম খরচের বিবাহ অধিক বরকতময়

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

কম খরচের বিবাহ অধিক বরকতময়

বিবাহ ইসলামের এক বিশেষ বিধান। সব মানুষের জীবনে বিবাহ জরুরি। মানুষ একা একা থাকতে পারে না। বিবাহের মাধ্যমে মানুষ নিজের জীবন সঙ্গিনী খুঁজে পায়। প্রশান্তির ছায়া লাভ করে। বিবাহের গুরুত্ব সম্পর্কে প্রিয় রসুল (সা.) এর অনেক বর্ণনা রয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বিবাহের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিবাহ করে নেয়। কেননা তা দৃষ্টিকে অবনত করে এবং লজ্জাস্থানকে সুরক্ষিত রাখে। আর যে ব্যক্তি সামর্থ্য না রাখে সে যেন রোজা রাখে। কেননা, রোজা প্রবৃত্তিকে দমনকারী।’ বোখারি ও মুসলিম। আরও এসেছে, হজরত আনাস (রা.) বলেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বিবাহ করল সে তার অর্ধেক ইমান পূর্ণ করে নিল। এখন সে যেন বাকি অর্ধেকের জন্য তাকওয়া ও খোদাভীতি অবলম্বন করে। বায়হাকি। হাদিসগ্রন্থ বায়হাকি শরিফের অপর বর্ণনায় এসেছে, হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার ফিতরত তথা স্বভাবধর্মকে মহব্বত করে, সে যেন আমার সুন্নতের অনুসরণ করে। আর আমার সুন্নতের মধ্যে বিবাহ অন্যতম। ইসলাম বিবাহ খুব সহজ করে দিয়েছে। অথচ আজকের সমাজ বিবাহকে অনেক কঠিন করে দিয়েছে। ইসলাম চায় মানুষ কম খরচে বিবাহ করুক। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় প্রচলিত হলো লাখ লাখ টাকা ছাড়া বিবাহ করার সুযোগ নেই।  পবিত্র কোরআনের সূরা নিসা (চতুর্থ পারা) অবতীর্ণ হয়েছে বিবাহ সংক্রান্ত বিধান বিষয়ে। তা ছাড়া নারীদের বিভিন্ন অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে বিবরণ দেওয়া হয়েছে এই সূরায়। হাদিসের কিতাবগুলোতেও এ সংক্রান্ত বর্ণনা প্রচুর। কম খরচের বিবাহে বরকত বেশি বলে রসুল (সা.) বর্ণনা করেছেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কম খরচে সম্পন্ন বিবাহ সবচেয়ে বরকতময়’—বায়হাকি শরিফ। এই হাদিসের প্রতি আমল করলে আমাদের ব্যক্তি জীবন ও পারিবারিক জীবন অনেক সহজ হবে। সামাজিক বিশৃঙ্খলা কমে যাবে। কারণ ছেলেমেয়ের বিবাহের বয়স হওয়ার পরও যদি বিবাহ করানো না হয়, তখন সামাজিক অবক্ষয় বাড়তে থাকে। মূল্যবোধ কমতে থাকে। অপরাধ বাড়তে থাকে। প্রিয় রসুল (সা.)-এর নির্দেশনা মেনে উপযুক্ত পাত্র-পাত্রীর বিবাহের আয়োজন করলে সবার জন্যই কল্যাণ বয়ে আনবে। এ বিষয়ে এসেছে, হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কাছে এমন কোনো ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব দেয় যার দীন ও চরিত্রের ওপর তুমি সন্তুষ্ট, তা হলে তার প্রস্তাব কবুল করে তার সঙ্গে বিবাহ করিয়ে নাও। যদি এমন না কর তাহলে পৃথিবীতে ফেতনা ছড়িয়ে পড়বে ও ভীষণ ফ্যাসাদ সৃষ্টি হবে। তিরমিজি। বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্রীর টাকা-পয়সার দিকে না তাকিয়ে তার সততা ও যোগ্যতার দিকে তাকানো উচিত। হজরত আবু ইমামা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, মুমিন ব্যক্তি আল্লাহপাকের তাকওয়া অর্জনের পর তার জন্য সতী স্ত্রীর চাইতে উত্তম কোনো নিয়ামত হাসিল করতে পারে না। (ইবনে মাজাহ)।

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর