সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

বেহাল সরকারি প্রতিষ্ঠান

অপচয় বন্ধে বেসরকারিকরণের কথা ভাবুন

সরকারি প্রতিষ্ঠান আর লোকসান সমার্থক শব্দ হিসেবে পরিচিত। দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকার অপচয়কে কর্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ায় লাগাতার লোকসান এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য অনিবার্য হয়ে উঠছে। দেশের বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো যখন দাপটের সঙ্গে ইতিবাচক অবস্থান তৈরি করছে, তখনই বিমানের অবস্থা বেহাল। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েও এটি এখন ডানাভাঙা প্রতিষ্ঠান। অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও সেবা দেওয়ার অবহেলায় একের পর এক আন্তর্জাতিক রুট তারা গুটিয়ে নিচ্ছে। বিমানের মতো রেলওয়ের অবস্থাও বেহাল। যেভাবে সামনের দিকে পথ চলার কথা, তা চলছে না। রেলকে পৃথক মন্ত্রণালয় করার পরও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। সরকারের আরেক প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল। এই প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে অপার বিস্ময় বিভিন্ন মহলে। বেসরকারি ফোন কোম্পানিগুলো লাভ করলেও সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি দিনের পর দিন শুধুই লোকসান গুনছে। স্বাস্থ্যসেবায় সরকারি হাসপাতালগুলোর অবস্থা খুবই করুণ। উন্নতমানের সেবা না পাওয়া, হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসক-কর্মচারীদের দুর্ব্যবহারের কারণে সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতি মানুষের অনাগ্রহ দিনে দিনে বাড়ছে। একই অবস্থা বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের। অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ডুবতে বসেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। লোকসান গুনছে বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থাও সংস্থার ১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯টিতে গত অর্থবছরে ৩৩৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের বিরুদ্ধেও। ফলে গ্রামীণ রাস্তাঘাটের উন্নয়নে সরকারের যে বরাদ্দ রয়েছে, সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। সরকার নগরবাসীর যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করতে দফায় দফায় সরকারি অর্থায়নে বিআরটিসির অধীনে যানবাহন নামালেও সেগুলো কিছুদিন পর মুখ থুবড়ে পড়ছে। যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলেই ফেলে রাখা হচ্ছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি। ডাক বিভাগ তো ইতিমধ্যে মৃত্যুপ্রায় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সেবার কোনো মান না থাকায় সাধারণ মানুষের কাছে তা কোনো অবদান রাখতে পারছে না। জনগণের অর্থ অপচয় বন্ধে এসব প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা উচিত কি না ভাবতে হবে। বেসরকারিকরণের বিষয়টিও বিবেচনায় আনা উচিত।

সর্বশেষ খবর