সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

পবিত্র হজ শুদ্ধাচারী হওয়ার শিক্ষা দেয়

মাওলানা মুহম্মদ সাহেব আলী

হজ শব্দের অর্থ একত্রিত হওয়া। হজ এমন একটি ইবাদত যা শুদ্ধাচারী হওয়ার শিক্ষা দেয়। হজ পালনের মাধ্যমে বান্দা তার জীবনকে শিরকমুক্ত রাখার অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়। ধর্মীয় পরিভাষা অনুসারে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে জিলহাজ মাসের ৯ তারিখে ইহরাম বাঁধা অবস্থায় জোহর থেকে আসর পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান এবং পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে পবিত্র কাবা শরিফ জিয়ারতের নাম হজ। হজের আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। যা ওয়াজিব বলে বিবেচিত। যেমন ৯ জিলহজের রজনীতে মুজদালিফায় অবস্থান, ৯, ১০ ও ১১ জিলহজ তারিখে শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপ, আল্লাহর উদ্দেশে হালাল পশু কোরবানি করা, মাথার চুল কামানো ইত্যাদি। হজব্রত পালনের সব আনুষ্ঠানিকতার মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর প্রতি বান্দার আনুগত্য নিরঙ্কুশ করা। শিরকমুক্ত জীবনের জন্য শপথ নেওয়া। নিজের জীবনকে আল্লাহ এবং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত পথে পরিচালিত করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া।

ইহরাম বাঁধা হজের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হজের উদ্দেশে দুই খণ্ড সাদা কাপড় পরাকে ইহরাম বলে। আড়াই হাত বহরের পাঁচ ও ছয় হাত লম্বা কাপড়ের প্রথমটি নিম্নাঙ্গ ঢাকার জন্য লুঙ্গির মতো পরতে হয়। দ্বিতীয়টি শরীরের ঊর্ধাঙ্গের চাদরের মতো পরতে হয়। ইহরাম বাঁধার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। যেখানে ইচ্ছা সেখানে ইহরাম বাঁধা যায় না। মূলত ইহরাম বাঁধার মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু। যেখান থেকে ইহরাম বাঁধা হয় সে স্থানকে মিকাত বলে। বাংলাদেশ থেকে যারা পবিত্র হজব্রত পালন করেন তারা বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে নিজ বাসগ্রহে বা বিমানে ওঠার আগে হাজী ক্যাম্পে ইহরাম বেঁধে নেন। আগে যখন সমুদ্র পথে হজ করা হতো তখন জেদ্দায় পৌঁছে ইহরাম বাঁধা হতো। হজের চারটি ফরজ বা অবশ্য পালনীয় বিষয় হলো প্রথমত, ইহরাম বাঁধা, দ্বিতীয়ত, তালাবিয়া পাঠ করা। তৃতীয়ত, আরাফাতের ময়দানে জোহর থেকে আসর পর্যন্ত অবস্থান করা, চতুর্থত, ১০, ১১ ও ১২ জিলহজ পবিত্র কাবা শরিফ জিয়ারত করা।

হজ যারা পালন করেন তারা আল্লাহর মেহমান। আল্লাহ যাদের প্রতি কৃপা করেন কেবল তাদের পক্ষেই হজব্রত পালনের উদ্দেশে হাজির হওয়া সম্ভব হয়। যারা হজ করতে যান তাদের শুদ্ধাচারী হওয়ার শপথ নিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহিভাবে হজ পালনের তাওফিক দিন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর