বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন

দুর্নীতির অবসান হওয়া উচিত

পাসপোর্ট নিতে হলে উেকাচ দিতে হয় এটি এক অপরিহার্য নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতি ক্ষমতাবানরা ছাড়া সবাই এ নিয়মটি মেনে চলতেও বাধ্য হন। তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণায় বলা হয়েছে— নতুন পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ৭৬ দশমিক ২ শতাংশ সেবাগ্রহীতাই পুলিশি তদন্তে অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়। সেবাগ্রহীতাদের ৭৫ দশমিক ৩ শতাংশ পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের জন্য পুলিশকে ঘুষ দেয়। এ বাবদ পুলিশের বিশেষ শাখায় গড়ে ৭৯৭ টাকা ঘুষ দিতে হয়। ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘পাসপোর্ট সেবায় সুশাসন : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের জরিপে অংশ নেওয়া সেবাগ্রহীতাদের ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ অনিয়ম, হয়রানি ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। পাসপোর্ট অফিস থেকে দেওয়া স্লিপে উল্লেখ করা নির্ধারিত সময়ে অনেকেই পাসপোর্ট পাচ্ছেন না। সেবাগ্রহীতাদের ৪১ দশমিক ৭ শতাংশ পাসপোর্ট করার সময় দালাল বা অন্যদের সাহায্য নিয়েছে। এ সহযোগিতা নেওয়ার হার সিলেটে সর্বোচ্চ ৬০ আর রাজশাহীতে সবচেয়ে কম ২০ শতাংশ। সম্মেলনে টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৫ সালের তুলনায় দুর্নীতি কিছুটা কমেছে। অর্থাৎ কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে। পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে পুলিশি ছাড়পত্র এবং সত্যায়ন ও প্রত্যয়নের বিধান বাতিলের পক্ষে মতামত রেখে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের উচিত মানুষকে বিশ্বাস করা। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী খোঁজ করলেই যেহেতু ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায় সেহেতু পুলিশি ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন নেই। টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে পাসপোর্ট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নাগরিকদের প্রতি পদে পদে যে দুর্নীতির শিকার হতে হয় সে বাস্তব চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে।  পাসপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে যে পুলিশ ভেরিফিকেশন হয় তার যথার্থতা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন রয়েছে। উেকাচ দিলেই যেহেতু রোহিঙ্গা এমনকি সমাজবিরোধীদের পক্ষেও পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব হয়, সেহেতু তথাকথিত পুলিশ ভেরিফিকেশন সেবাগ্রহীতাদের পকেট কাটা এবং পুলিশ সদস্যদের পকেট ভর্তিতেই শুধু অবদান রাখছে। দুর্নীতি রোধের স্বার্থেই সরকারকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর