বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাত খুনের দৃষ্টান্তমূলক রায়

প্রমাণিত হলো কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়

নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষে হাই কোর্ট নিম্ন আদালতে শাস্তিপ্রাপ্ত ৩৫ আসামির মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৬ আসামির ১৫ জনের দণ্ড বহাল রেখেছেন বাকি ১১ জনের শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবনের নির্দেশ দিয়েছেন। নিম্ন আদালতে শাস্তিপ্রাপ্ত অন্য ৯ আসামির শাস্তি হাই কোর্টেও বহাল রাখা হয়েছে। হাই কোর্টে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক কর্নেল (বরখাস্ত) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, র্যাবের সাবেক দুই কোম্পানি কমান্ডার মেজর (বরখাস্ত) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (বরখাস্ত) এম মাসুদ রানা, হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, এ বি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব আলী, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আবদুল আলিম, মহিউদ্দিন মুনশি, আল আমিন ও তাজুল ইসলাম। স্মর্তব্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহূত হন কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম ও স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর। এ ঘটনা দেখে ফেলায় নজরুলের গাড়ির পেছনে থাকা আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিমও অপহূত হন। এর তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ছয়টি লাশ ভেসে ওঠে। পরদিন পাওয়া যায় আরেকটি লাশ। এ ঘটনায় কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় একই থানায় আরেকটি মামলা করেন চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। এ হত্যাকাণ্ডে র্যাব-১১ এর অধিনায়কসহ তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা ফাঁস হয়ে পড়ে। টাকার বিনিময়ে তারা এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশি তদন্তে সে অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হয়। হাই কোর্ট মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৬ জনের ৯ জনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দিলেও মূল আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা বহাল রেখেছেন। আসামিরা প্রচণ্ড ক্ষমতাধর হওয়া সত্ত্বেও আইনের আওতা থেকে রক্ষা পাননি। এ অভিনন্দনযোগ্য রায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অনুপ্রেরণা জোগাবে এমনটিই আশা করা যায়।

সর্বশেষ খবর