শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

আনান কমিশনের রিপোর্ট

রোহিঙ্গা সমস্যার গ্রন্থিমোচন করুক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও চলাফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সুপারিশ করেছে আনান কমিশন। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন জঙ্গিবাদের ঝুঁকি এড়িয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও অবাধ চলাফেরার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে। রোহিঙ্গা সমস্যার গ্রন্থিমোচনে আনান কমিশনের প্রতিবেদন পথ দেখাতে পারে। কমিশন তাদের প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব যাচাইয়ে একটি নির্দিষ্ট কৌশল ও সময়সীমা ঠিক করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেছে এবং বলেছে এটি হতে হবে স্বচ্ছ এবং বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার আনান কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। একই দিন বিকালে ইয়াঙ্গুনে এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কফি আনান। এর আগে তিনি প্রতিবেদনটি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট তিন কিউ ও শীর্ষ নেত্রী অং সান সু চির কাছে তুলে দেন। স্মর্তব্য, গত সেপ্টেম্বরে কফি আনানের নেতৃত্বে মিয়ানমারের ছয়জন এবং নেদারল্যান্ডস ও লেবাননের দুজন নাগরিককে নিয়ে নয় সদস্যের কমিশন গঠিত হয়। গত এক বছরে মিয়ানমারের সিটওয়ে, মংডু, বুথিডং, ইয়াঙ্গুন, নেপিদো ছাড়াও ব্যাংকক, ঢাকা, কক্সবাজার ও জেনেভায় অন্তত ১৫৫টি বৈঠক করে প্রায় ১ হাজার ১০০ ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন তাদের প্রতিবেদন তৈরি করে। আনান কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ৮৮টি সুপারিশ করা হয়েছে। এতে রাখাইনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানবিক সহায়তা, লোকজনের অবাধ চলাচল ও নাগরিকত্ব আইনের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্যও বিড়ম্বনা সৃষ্টি করেছে। ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। দুই দেশের সম্পর্ক নিবিড়করণের পথেও আস্থার সংকট সৃষ্টি করছে এ সমস্যা। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যাকে কেন্দ্র করে জঙ্গিবাদ বিস্তারের যে বিপদ সৃষ্টি হয়েছে তা বাংলাদেশের জন্যও হুমকিস্বরূপ। আমরা আশা করব, মিয়ানমার সরকার আনান কমিশনের প্রতিবেদনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখাবে এবং সমস্যার জট মোচনে এগিয়ে আসবে। মিয়ানমারের স্থিতিশীলতা ও আঞ্চলিক শান্তির জন্যও তা প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর