মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

অসির চেয়ে মসি বড়

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

অসির চেয়ে মসি বড়

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কোনোভাবেই থামছে না। বরং প্রতিদিন নিত্যনতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। দেশে বিরাজমান নানা সমস্যা ছাপিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কেন্দ্রীভূত হচ্ছে এ রায় নিয়ে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা রায় নিয়ে রাজনীতি না করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানালেও সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। সরকারি দল থেকে স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে, এ রায়ে অকারণে অপ্রাসঙ্গিক, অযৌক্তিক বিষয়গুলো টেনে এনে সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপিকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ভিন্ন পক্ষের মতে রায়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলে গণ্য হলেও এ রায়ের রেশ কত দূর পর্যন্ত যাবে তা এ মুহূর্তে বলা মুশকিল। তবে রায় নিয়ে সরকার ও বিচার বিভাগ যে মুখোমুখি, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

মূলত ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া রায় এবং রায়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে যে নিবিড় পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন তা নিয়ে সরকারের সমালোচনা ও মন্ত্রীদের তীব্র প্রতিবাদের মধ্যেই আবার নতুন মাত্রা যোগ করলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া রায়ের সমালোচনা করতে গিয়ে ৯ আগস্ট তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। রায় নিয়ে বিচারপতি খায়রুল হকের বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে তার প্রধান বিচারপতি থাকাকালে দেওয়া বিভিন্ন রায়ের প্রসঙ্গে আজ সমালোচনামূলক কথা উঠতে শুরু করেছে। অনেক আইন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, অতীতে সাবেক কোনো প্রধান বিচারপতি এভাবে কোনো রায় নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেননি। আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে সরকারি একটি লাভজনক পদে থেকে বিচারপতি খায়রুল হক এভাবে রায়ের সমালোচনা করতে পারেন কিনা অথবা তিনি যে পদে আছেন সে পদের দায়িত্বের মধ্যে তা পড়ে কিনা এসব বিষয় এখন আলোচনায় চলে এসেছে। তিনি একসময় নিজের রায়ে বলেছিলেন, অবসর গ্রহণের পর কোনো বিচারপতি প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদ গ্রহণ করতে পারেন না।

এ বি এম খায়রুল হক ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের সমালোচনা করে বলেছেন, এতে অতিমাত্রায় অপ্রাসঙ্গিক বিষয় টেনে আনা হয়েছে যার কোনো প্রয়োজন ছিল না। এ রায় সুপরিকল্পিত। বাংলাদেশ এখন গণপ্রজাতন্ত্র থেকে বিচারকতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। তার বক্তব্যের এসব প্রসঙ্গ টেনে এনে অনেকে বলেছেন, মুন সিনেমা হলের রায় দিতে গিয়ে তিনি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছিলেন এবং সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা-সংবলিত ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে তিনি সে সময় তীব্রভাবে সমালোচিত ও বিতর্কিত হয়েছিলেন। দেশে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট ও অনাকাঙ্ক্ষিত নানা পরিস্থিতি উদ্ভবের কারণ হিসেবে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় গণ্য বলে অনেকে মনে করেন। বিশেষ করে প্রাথমিকভাবে সংক্ষিপ্ত রায়ে অন্তত আরও দুবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যেতে পারে বলে বলা হলেও ১৬ মাস পরে দেওয়া লিখিত রায়ে সে বিষয়টি একেবারে তুলে দেওয়ার যথার্থতা নিয়ে অনেক আইন বিশেষজ্ঞের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অভিযোগ করেছে, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার রায়ে স্বাধীনতাযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে খাটো করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অনেক উপর সারির নেতাসহ মন্ত্রিসভার সদস্যদের কেউ কেউ এ রায়ের কড়া সমালোচনা করেছেন। অথচ ষোড়শ সংশোধনীর ৭৯৯ পৃষ্ঠার রায়ে দেখা যায়, শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণে মোট ১১ বার এসেছে। এর মধ্যে সর্বাধিক ৫ বার উল্লিখিত হয়েছে প্রধান বিচারপতির রায়ের অংশে। বঙ্গবন্ধু শব্দটি এসেছে ৯ বার। এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি একাই উল্লেখ করেছেন ৩ বার। বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক হিসেবেও বর্ণনা করেছেন প্রধান বিচারপতি। রায়ে স্বাধীনতাযুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবদানের কথা শুধু প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণে দেখা যায়। তিনি লিখেছেন পাকিস্তানি জান্তারা কল্পনাও করতে পারেনি, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে এভাবে বিপুল জয় লাভ করতে পারে। রায়ের ৬১ পৃষ্ঠায় তিনি বাংলাদেশ সংবিধানের প্রস্তাবনায় থাকা ‘আমরা’ কথাটির গুরুত্ব সম্পর্কে লিখেছেন। এ ছাড়া তৎকালীন গণপরিষদের নির্বাচিত আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিরা যে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সে সম্পর্কেও তিনি বলেছেন। কিন্তু তিনি এও উল্লেখ করেছেন, কতিপয় ধর্মীয় উগ্রপন্থি এবং তাদের অশুভ সহযোগী ব্যতিরেকে তাঁতি, মজুর, শিক্ষক, পুলিশ, আর্মি, আনসার, বিডিআর, অন্যসব রাজনৈতিক দলসহ সর্বস্তরের জনগণ স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল।

প্রসঙ্গক্রমে প্রধান বিচারপতি আরও লিখেছেন, আমরা যদি সতর্কতার সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক অস্তিত্বের দর্শনের দিকে নজর দিই তাহলে দেখব, সংবিধানের প্রস্তাবনায় থাকা ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণ’ থেকেই আমাদের সব মৌলিক চিন্তা-ভাবনা বিকশিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে আমরা যে বিজয় ছিনিয়ে এনেছি তার মূলে রয়েছে এই ‘আমরাবাদ’ (উইনেস) প্রতিষ্ঠা। কিন্তু এখন আমরা অজ্ঞতা ও স্বেচ্ছাচারিতার কবলে পড়ে এই ‘আমরাবাদ’কে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছি। এর পরই তিনি সেই মন্তব্য করেছেন যা নিয়ে এখন বিতর্ক চলছে। তা হলো, ‘কোনো জাতি বা দেশ কোনো এক ব্যক্তিকে দিয়ে গড়ে ওঠে না, কিংবা কোনো একজন দ্বারা তা গঠিতও হয় না। আমরা যদি সত্যিই জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় বাঁচতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে আমিত্বের আসক্তি এবং এই আত্মঘাতী অভিপ্রায় থেকে মুক্ত হতে হবে।’ রায়ে প্রধান বিচারপতি তার পর্যবেক্ষণের এক জায়গায় সংসদ সদস্যদের নয়, বাংলাদেশের সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে অপরিপক্ব বলেছেন। প্রধান বিচারপতি ষোড়শ সংশোধনী মামলায় হাই কোর্টের রায়ের পর সংসদে বিচারকদের সমালোচনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তার মন্তব্যে বলেছেন, ‘সংসদের ফ্লোরে রায়ের সমালোচনা হয়েছে অসংসদীয় ভাষায়। এটা প্রমাণ করে, আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্র অপরিপক্ব এবং পরিপক্বতা অর্জন করতে হলে ধারাবাহিকভাবে অন্তত চার-পাঁচ মেয়াদে সংসদীয় গণতন্ত্র অনুশীলন করার প্রয়োজন রয়েছে।’ কিন্তু কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, তিনি সংসদ বা সংসদ সদস্যদের অপরিপক্ব বলেছেন। যা সঠিক বলে প্রতীয়মান হয় না।

তবে রায়ে প্রধান বিচারপতি নির্বাচন সম্পর্কে যে গুরুত্বপূর্ণ মূল্যায়ন করেছেন তা হলো, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি নিরপেক্ষভাবে এবং কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বাধীনভাবে না হতে পারে তাহলে গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অভাবে একটি গ্রহণযোগ্য সংসদ গঠিত হতে পারে না। এর ফল হিসেবে আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং সংসদ শিশু অবস্থায় রয়ে গেছে। সে কারণে জনগণ নির্বাচন কমিশন ও সংসদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না এবং এসব প্রতিষ্ঠান যদি জনগণের আস্থার ও শ্রদ্ধা অর্জনে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ঘটাতে না পারে তাহলে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অভাবে সংসদ জ্ঞানী ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত হতে পারে না। এর ফলে সংসদের নিজেরই প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। আর যদি সংসদ যথেষ্ট পরিপক্ব না হয় তাহলে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা তাকে দেওয়া হবে আত্মঘাতী।’

বলাবহুল্য, প্রধান বিচারপতি তার রায়ের পর্যবেক্ষণে যে বিষয়গুলো এনেছেন তা আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজের অস্থির চিত্তের প্রকাশ্য রূপ। এতে রাজনীতি, ইতিহাস এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম ও চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। রাজনৈতিকভাবে আজ যে একক শাসন ক্ষমতার বিকাশ ঘটতে যাচ্ছে তা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। এমনকি বিভেদ-বিভাজন ও প্রতিহিংসার অনলে পুড়ে রাজনীতি আজ কোন জায়গায় ধাবিত হতে যাচ্ছে তা আমাদের ভীষণভাবে ভাবিয়ে তুলছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এই প্রতিহিংসা ও বিভেদ-বিভাজন থেকে বেরিয়ে ন্যায়বিচার ও সহিষ্ণুতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রায়ে তার পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সংসদ, আমলাতন্ত্র, নির্বাচন কমিশনসহ অন্য সাংবিধানিক সংস্থা, আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সবাই যে সৎ-নিষ্কলুষ, দায়িত্বশীল তা মোটেই বলা যাবে না। বরং এসব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বজ্ঞানহীন, অসৎ আচরণের কারণে সমাজ ও রাষ্ট্রের সার্বিক ক্ষতি হচ্ছে এবং যা একসময় রাষ্ট্রকে অকার্যকর ও ক্ষয়িষ্ণুতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা না গেলে রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। ক্ষমতাসীনরা হয়তো মনে করছেন বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে নিতে পারলে দীর্ঘমেয়াদে শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আর কোনো পক্ষ অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারবে না। সে জায়গায় আজ প্রধান বিচারপতি তার কলম ধরেছেন। অসির চেয়ে মসি যে বড় সেটাই আজ প্রমাণিত হয়েছে।

ক্ষমতাসীনরা যেভাবে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের কথা বলছেন সেখানে তার বাস্তব পরস্ফুিটন যে দেখা যাচ্ছে না, তা আজ প্রধান বিচারপতির রায়ের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। অন্যায়ের প্রতিকার বা প্রতিবাদ করার ভাষাও আজ মানুষ হারিয়ে ফেলেছে। যা আজ স্বীকৃত সত্য হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। শুধু সামরিক শাসনের দোষারোপের কথা বলা হলেও আজ গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে কী ধরনের শাসন আমরা প্রত্যক্ষ করছি, তা ভুক্তভোগীরাই বলতে পারবেন। একটি নির্দিষ্ট দল ও তাদের জোটভুক্ত রাজনৈতিক দল ছাড়া অন্য দলগুলোকে সংবিধানস্বীকৃত সব মৌলিক অধিকার যেমন সভা-সমাবেশ, মিছিল, প্রতিবাদ-সভা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে বার বার অভিযোগ উঠছে। বিরোধী মতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও সরকারের রোষানল থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। শত শত মামলার খড়্গ মাথায় নিয়ে তাদের প্রতিদিন বিচারালয়ে হাজির হতে হচ্ছে।

পরিশেষে বলা যায়, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারক অপসারণসংক্রান্ত রায়কে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদরা প্রকাশ্যে যে ধরনের বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন তা কারোর জন্যই কল্যাণ বয়ে আনবে না। কেননা উচ্চ আদালত হলো মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল। তাই সব পক্ষের রাজনীতিবিদের এমন কোনো বক্তব্য দেওয়া উচিত হবে না, যাতে আদালতের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো ধরনের প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। আদালতের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সব রাজনৈতিক দলসহ নির্বাহী বিভাগ তথা সরকারকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। রাষ্ট্রের সব অঙ্গ অর্থাৎ শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ পরস্পরের পরিপূরক। আদালতের দেওয়া কোনো রায় নিয়ে কোনো পক্ষ সংক্ষুব্ধ হতেই পারে কিন্তু তার প্রকাশ হবে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের মধ্য দিয়ে, আদালতের প্রতি অনুদার মন্তব্য ও বিষোদগার করে নয়। সংবিধানের ১১১ ও ১১২ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতকে বিচার-বিশ্লেষণ করে রায় দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া লক্ষণীয় যে, এ রায়টি এসেছে সর্বোচ্চ আদালতের সাতজন বিচারকের সর্বসম্মত রায় হিসেবে। নয়জন অ্যামিকাস কিউরির মধ্যে একজন ছাড়া বাকি আটজনের অভিমত ছিল ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পক্ষে, সে হিসেবে রায়টির তাৎপর্য ও গুরুত্ব ঐতিহাসিক। রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে অতীতে আদালতের বিরুদ্ধে লাঠিমিছিল ও বিচারপতিদের কক্ষের দরজায় লাথি মারতে আমরা দেখেছি। এই অপসংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে, আদালত স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিকাশ লাভ না করলে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হবে। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে আমরা জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব না। রাষ্ট্রের সার্বিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়বে। অন্ধকার যুগের মানুষের সেই অসির অমানবিক দৌরাত্ম্যের চেয়ে মসি যে বড় সেই দীক্ষায় জাতিকে অনুপ্রাণিত করতে হবে। যাতে জাতির ভবিষ্যৎ আলোর পথ উন্মোচিত হয়।

 

লেখক : চেয়ারম্যান, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

ইমেইল : [email protected]

সর্বশেষ খবর