বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ

জাতিসংঘকে দায়বোধে আবদ্ধ হতে হবে

রোহিঙ্গা ইস্যুতে দেরিতে হলেও জাতিসংঘ খোলস থেকে বেরিয়ে আসছে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৩৬তম অধিবেশনে মানবাধিকার বিষয়ক ইউএন হাইকমিশনার জায়িদ রা’দ আল হুসেইন বলেছেন, রোহিঙ্গারা জাতিগত নিধনযজ্ঞের শিকার হচ্ছে। তিনি রাখাইনের পরিস্থিতিকে অন্ধকার ও বিপজ্জনক হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, সেখানে যা চলছে তা জাতিগতভাবে নির্মূলের যথার্থ উদাহরণ। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গা নিধনে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় মিলিশিয়াদের অংশগ্রহণের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার বলেন, মিয়ানমার জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্ত দলকে ঢুকতে দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। ফলে সেখানকার পরিস্থিতির পুরোপুরি মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। তিন দিন আগে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত বলেছেন, রাখাইনে এক হাজারের বেশি মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। তবে বাংলাদেশে মিয়ানমারের যেসব শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে তাদের বক্তব্য সত্যি হলে ভাবতেই হবে প্রকৃত পরিস্থিতি কল্পনার চেয়েও বেশি। কাজাখস্তানে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা ওআইসির বৈঠকেও মিয়ানমারে রোহিঙ্গা হত্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং হত্যাযজ্ঞ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কে জাতিসংঘের বক্তব্য প্রকারান্তরে জাতিগত নিধন বন্ধে বিশ্বসংস্থাকে দায়বোধে আবদ্ধ করেছে। প্রতিবেশী দেশের সমস্যায় বাংলাদেশকেও ভুগতে হচ্ছে ভীষণভাবে। প্রলয়ঙ্করী বন্যা ও টানা বর্ষণে দেশের লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তাদের পুনর্বাসনে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার ওপর কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর বোঝা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চার যুগ ধরে বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছে প্রতিবেশী দেশের জাতিগত সমস্যা। এ সমস্যার আশু সমাধান বাংলাদেশের জন্যও জরুরি হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গাদের সম্মানজনকভাবে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে জাতিসংঘসহ বিশ্বসম্প্রদায় এগিয়ে আসবে এমনটিই প্রত্যাশিত।  এ ব্যাপারে শুধু সহানুভূতি নয়, বাস্তব সমাধানেও তারা মনোযোগ দেবেন আমরা এমনটিই আশা করতে চাই।  এ উদ্দেশ্যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ এলাকা গঠনের কথা ভাবা যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর