বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা

এ দুর্ভোগের অবসান কাম্য

রাজধানীতে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা যেন তার অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে পড়েছে। দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার খেসারত দিতে হচ্ছে রাজধানীর দেড় কোটি মানুষকে। সোমবার সকালে বৃষ্টিপাতের পর রাজধানীর বেশির ভাগ সড়ক ও গলিপথ জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত হয়। সকাল ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার বৃষ্টিপাতেই জনজীবনে নেমে আসে ভয়াবহ ভোগান্তি। বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতা নগরবাসীর নিয়তির লিখন হয়ে ওঠার পেছনে ওয়াসার দায়হীন ভূমিকা অনেকাংশে দায়ী। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং পরিচর‌্যার বদলে ওয়াসার কর্তাব্যক্তিরা নিজেদের আখের গোছানোর কাজেই বেশি ব্যস্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। বৃষ্টি হলে শুধু ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে এবং নিষ্কাশন পাম্প চালু করে দায়িত্ব শেষ করার ট্রাডিশনে তারা অভ্যস্ত। সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থার উন্নয়ন কাজের নামে মাসের পর মাস রাস্তায় কাজ চলায় এবং বৃষ্টির পানি নামার পথগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সোমবার ছয় ঘণ্টা বৃষ্টিপাতের পর পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। একদিকে জলাবদ্ধতা ও আরেক দিকে যানজট নগরবাসীকে জিম্মি করে ফেলে। চলতি বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা বেশি হওয়ায় বার বার এ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে। রাজধানীর জলাবদ্ধতা সমস্যার জন্য দায়ী নিষ্কাশন ব্যবস্থার অচলাবস্থা। রাজধানীর যেসব প্রাকৃতিক খাল পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত হতো তার সিংহভাগ ইতিমধ্যে বেদখল হয়ে পড়েছে। যেগুলো কোনো রকম অস্তিত্ব টিকিয়ে আছে সেগুলোও ময়লা-আবর্জনায় ভরা। স্বভাবতই বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা এড়ানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। যানজটের নগরীতে জলাবদ্ধতার আগ্রাসন যানজটকেও ভয়াবহ করে তুলছে। অচল হয়ে পড়ছে পুরো নগরী। কর্মজীবীরা কর্মস্থলে যাওয়া এবং কর্মস্থল থেকে ফেরার সময় দুর্ভোগের কবলে পড়ছেন। শিশু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের দুর্ভোগ সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এ সাংবার্ষিক উপদ্রব থেকে নগরবাসীকে রক্ষায় জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে নগর কর্তৃপক্ষকে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।  রাজধানীর অপদখলকৃত প্রাকৃতিক খাল ও জলাশয়গুলো উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।  সমস্যার সমাধানে ওয়াসার মতো শ্বেতহস্তির ওপর নির্ভর না করে দায়িত্ব নিতে হবে সিটি করপোরেশনকে। নগরবাসীর প্রতি দায় থেকেই এ ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর