বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের পাশে প্রধানমন্ত্রী

মিয়ানমার ভ্রান্ত পথ থেকে সরে আসুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের প্রতি অমানবিক আচরণ ও অত্যাচার বন্ধ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ছোটবোন শেখ রেহানাকে নিয়ে উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবির পরিদর্শনকালে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের কাহিনী শুনে প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং দুর্গত নারী ও শিশুদের কাছে টেনে নিয়ে তাদের সান্ত্বনা দেন। প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার সরকারের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শান্তি ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার নীতিতে বিশ্বাসী। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ মিয়ানমারের শরণার্থীদের আশ্রয় দিলেও এ দেশের ভূমি ব্যবহার করে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী তত্পরতা বরদাস্ত করা হবে না। মিয়ানমার সরকারের কাছে অনুরোধ, তারা যেন নিরীহ মানুষের ওপর নির্যাতন বন্ধ করে। তারা যেন প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে যা যা সাহায্য করা দরকার, আমরা তা করব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মানুষদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। মানুষ উপায় না পেয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। তাই আমাদের যতটুকু সামর্থ্য আছে তা দিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায্য করা হচ্ছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের খাদ্য, আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে যেভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে তাতে কি তাদের বিবেককে নাড়া দেয় না? একজনের ভুলে এভাবে লাখ লাখ মানুষ ঘরহারা হচ্ছে। আমরা ১৬ কোটি মানুষের দেশ। এ দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা যেহেতু নিশ্চিত করা হয়েছে সেহেতু আরও ৫-৭ লাখ মানুষকে আমরা খেতে দিতে পারব। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনকালে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে প্রকারান্তরে দেশের ১৬ কোটি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিই প্রকাশ পেয়েছে। মিয়ানমারের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং জাতীয় ঐক্য প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের কাছেও প্রত্যাশিত। কিন্তু গুটি কয়েক জঙ্গি সন্ত্রাসীর অপরাধের দায় নিরীহ মানুষের ওপর চাপানোর যে ভ্রান্তিতে সে দেশের সরকার ভুগছে তা দুর্ভাগ্যজনক। মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্যের স্বার্থেই এ ভুল পথ থেকে তাদের সরে আসা উচিত।

সর্বশেষ খবর