বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইতিহাস

হযরত আলীর উভয় সঙ্কট

খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি উভয় সংকটে পড়েন। হজরত উসমান (রা.)-এর মনোনীত গভর্নরদের অপসারণ ছিল বিদ্রোহীদের দাবি। অন্যদিকে উমাইয়া এবং মুসলিম উম্মাহর একটি বড় অংশের দাবি ছিল হরজত উসমান (রা.) হত্যাকাণ্ডের বিচার। এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যাপারে হজরত আলীর (রা.) আপত্তি ছিল না। কিন্তু বসরা, কুফা ও ফুস্তাতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থাকায় সে দাবি তাত্ক্ষণিকভাবে পূরণ করা সম্ভব ছিল না। তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর উসমান (রা.)-এর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন। এ প্রশ্নে ইসলামী সমাজের বিশিষ্টজনরা বিভক্ত হয়ে পড়েন। হজরত তালহা, যুবাইর এমনকি হজরত আয়েশা (রা.), হজরত উসমান (রা.) হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আশু শাস্তিদানের পক্ষে ছিলেন। দুই পক্ষের বিরোধ শেষ পর্যন্ত গৃহযুদ্ধের সূচনা করে। হজরত যুবাইর ও তালহা হজরত আলী (রা.)-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে সংঘাত দানা বেঁধে ওঠে। মহানবী (সা.)-এর কনিষ্ঠ পত্নী হজরত আয়েশা (রা.) এ সংঘাতে যুবাইর ও তালহার পক্ষাবলম্বন করেন। হজরত আলী (রা.) যুদ্ধ এড়াতে আপসের চেষ্টা চালান। দুই পক্ষের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণাধীনে আসার পর হজরত উসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। এ আপসে আঁতকে ওঠে হজরত উসমান (রা.)-এর হত্যার সঙ্গে জড়িত কুচক্রীরা। তারা রাতের আঁধারে আশতার ও নাখয়ী ইবনে শাওদার নেতৃত্বে উভয় শিবিরে হামলা চালিয়ে হজরত আলী (রা.)-এর সমর্থক এবং যুবাইর (রা.) ও তালহা (রা.)-এর সমর্থকদের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেয়। হজরত আলী (রা.) যুদ্ধ বন্ধে প্রাণপণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। চতুর্থ খলিফা শান্তির জন্য হজরত যুবাইর (রা.) ও তালহা (রা.) কে আহ্বান জানালে তারা যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করেন। এবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে কুচক্রীরা। তারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রস্থানের পথে হজরত যুবাইর ও তালহাকে হত্যা করে। ফলে যুদ্ধ বন্ধের বদলে আরও ঘোরতর হয়ে ওঠে।

জাফর খান

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর