রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আদল বা সুবিচার আল্লাহর বৈশিষ্ট্যের অংশ

মোহাম্মদ ওমর ফারুক

আদল বা সুবিচার আল্লাহর বৈশিষ্ট্যের অংশ

ইসলাম সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের জীবন বিধান। মানব জাতিকে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে যেহেতু পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে সেহেতু সত্য ও ন্যায়ের উৎস মহান আল্লাহর ঐশী আলোয় মানুষ নিজেদের আলোকিত করবে এমনটিই মহান আল্লাহর ইচ্ছা।

শরিয়তের ভাষায় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সত্য ও ন্যায়ের মানদণ্ড অনুসরণকে আদল বলা হয়। সাধারণভাবে আদল হলো ন্যায়ভিত্তিক ব্যবস্থা, সর্বক্ষেত্রে সুবিচার নিশ্চিত করা। আদল বা সুবিচার আল্লাহর বৈশিষ্ট্যের অন্তর্গত। আল্লাহ যা কিছু করেন সেখানে সুবিচার নিশ্চিতভাবে প্রাধান্য পায়। তিনি যা কিছু বলেন, তাতে আদলের তথা সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের প্রতিফলন ঘটে। আল্লাহর সব সৃষ্টির মধ্যে আদলের প্রতিচ্ছবি বিদ্যমান। মহান আল্লাহর সব সৃষ্টিই ভারসাম্যপূর্ণ। অর্থাৎ যেখানে যেমন থাকা উচিত তেমনই সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহ নিজেই আদলের প্রতিকৃতি বিধায় তাঁর গুণবাচক নাম আদেল।

ইসলামে অলঙ্ঘনীয় বিষয় হিসেবে আদল বা সুবিচার তথা সুনীতিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ স্বয়ং আদলের প্রতিভূ। পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন সূরায় আল্লাহর এই গুণাবলিকে তুলে ধরা হয়েছে। সূরা গাফিরের ৩নং আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহতায়ালা যথার্থ ফয়সালা দান করেন। সূরা আন নিসার ৫৮নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা যে নিশ্চিতভাবে সত্যনিষ্ঠ সে বিষয়টি স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে— ‘কথাবার্তায় আল্লাহতায়ালার চেয়ে কে বেশি সত্যবাদী?’ সূরা আল আহযাবের ৪নং আয়াতে আল্লাহর আদল বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরে বলা হয়েছে, ‘এবং আল্লাহতায়ালা যথার্থ বক্তব্য দান করেন।’ সূরা আলে ইমরানের ১৮নং আয়াতে মহান স্রষ্টার বৈশিষ্ট্য বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই এবং ফেরেশতাগণ এবং আলেমগণও (সাক্ষ্য দেন)। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। (তিনি) পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।’ আল্লাহ যা কিছু করেন তা ন্যায়সঙ্গতভাবে করেন। তাঁর বাণীও মহাসত্যের প্রতিরূপ। সূরা আল আনআমের ১১৫নং আয়াতে এ বিষয়টি ইশারা করে বলা হয়েছে, ‘আর আপনার প্রতিপালকের বাণী সত্যরূপে ন্যায়সঙ্গতভাবে পূর্ণত্ব লাভ করেছে।’

ইসলামী বিশ্বাস মতে, মহান আল্লাহ তাঁর স্বকীয় মহিমায় মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। মানবজীবন, মানবসমাজ তথা ব্যক্তিজীবন থেকে রাষ্ট্রীয় জীবন— সর্বত্রই আল্লাহমুখী হওয়া বা আল্লাহর আদল তথা সর্বক্ষেত্রে ন্যায় সুবিচার ও ভারসাম্যের নীতি ধারণ করার মাধ্যমেই শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়। আল্লাহ আমাদের সে তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর