বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা

মিয়ানমারের সুবুদ্ধি উদয়ে সহায়ক হবে

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধন ঠেকাতে সে দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তারা অবরোধের মুখে পড়লে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে সাড়া দিতে বাধ্য হবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ সহিংস ভূমিকার কারণে বিশ্বব্যাপী নিন্দিত হচ্ছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর এমন কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা দরকার যাতে সে দেশের জেনারেলরা তা কোনোভাবেই উপেক্ষা করতে না পারে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং এই ইস্যুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর উচিত মিয়ানমারের ওপর কঠোর অবরোধ ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, যেন তাদের জাতিগত নিধন সংক্রান্ত প্রচারণা ও কার্যক্রম বন্ধ করা যায়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রথমত নিরাপত্তা পরিষদের একটি উন্মুক্ত আলোচনায় বসা উচিত। রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতারেসকেও আমন্ত্রণ জানানো উচিত আলোচনায়। যারা এরকম নৃশংস অপরাধ করেছে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে শাস্তির বিষয়ও নিশ্চিত করা উচিত পরিষদের। বিবৃতিতে অপরাধী নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা ও সেনাবাহিনী পরিচালিত ব্যবসাগুলোর আর্থিক লেনদেন বন্ধেরও সুপারিশ করা হয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময়কালে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সবচেয়ে নিপীড়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। শুধু রোহিঙ্গা নয়, সে দেশের শতাধিক ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিটিই জাতিগত নিপীড়নের শিকার। বিশ্ব জনমতের চাপে মিয়ানমারের অর্ধশত বছরের সামরিক শাসনের অবসান হলেও সে দেশের সংবিধানে পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীর ২৫ শতাংশ সদস্য রিজার্ভ রাখা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় সেনাবাহিনীর হাতে রেখে বেনামিতে সেনাশাসনই চালু রাখা হয়েছে। অং সান সু চির পেছনে সিংহভাগ দেশবাসীর সমর্থন সত্ত্বেও তিনি রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী পদে বসতে পারেননি সেনাবাহিনী প্রণীত সংবিধানের কারণেই।  রোহিঙ্গা শুধু নয়, মিয়ানমারবাসীর মানবাধিকার নিশ্চিত করতেই সে দেশের সেনাবাহিনীর পাশবিক ক্ষমতার রাশ টেনে ধরা দরকার।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর