শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বন্ড সুবিধার অপব্যবহার

দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বন্ড সুবিধার নামে আমদানি করা পণ্যের কালোবাজারি সরকারকে যেমন শত শত কোটি টাকার শুল্ক থেকে বঞ্চিত করছে তেমন দেশীয় শিল্পের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনছে। এ ব্যাপারে অসৎ আমদানিকারকদের বিরুদ্ধে ৩৬৭টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বন্ড সুবিধার নামে কী ধরনের যথেচ্ছতা চলছে বিপুলসংখ্যক মামলাও তার প্রমাণ। সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোতে প্রায় ৬৭১ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। কর্তৃপক্ষীয় নজরদারির অভাবে শিল্প-কারখানার অস্তিত্ব নেই এমন কাগুজে প্রতিষ্ঠানও বন্ড সুবিধায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য আমদানির সুযোগ পাচ্ছে। এ ধরনের বন্ড লাইসেন্সধারী ৪৭৯টি প্রতিষ্ঠানের ওপর কর্তৃপক্ষীয় নজরদারি নেই বললেই চলে। বন্ড সুবিধায় পণ্য আমদানি করে কালোবাজারে বিক্রি করে দেওয়ায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের বিকাশমান কাগজ শিল্প। শর্ত অনুযায়ী বিনা শুল্কে কাঁচামাল আমদানির পর আমদানিকারককে তা নিজস্ব বন্ডেড ওয়্যারহাউসে রেখে পুরোটাই সংশ্লিষ্ট কারখানার পণ্য উৎপাদনে ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বন্ড সুবিধার শর্ত লঙ্ঘন করে অসাধু ব্যবসায়ীরা আর্ট কার্ড, ডুপ্লেক্স বোর্ড, কার্বনলেস পেপার, হার্ড টিস্যুসহ তৈরি পোশাক শিল্পে ব্যবহূত কাগজ ও কাগজজাতীয় বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে খোলাবাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। দেশের কাগজকলগুলো অসৎ ব্যবসায়ীদের ধোঁকাবাজির শিকার হয়ে অসম প্রতিযোগিতায় পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে। কাগজ শিল্পের উদ্যোক্তারা সব নিয়ম-কানুন মেনে এবং সরকারের কোষাগারে যথাযথ রাজস্ব জমা দিয়ে ব্যবসা করলেও সরকার তাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। বন্ড সুবিধায় বিদেশ থেকে কাগজ আমদানি ব্যবসার আড়ালে প্রতি বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে বলেও আশঙ্কা করা হয়। এনবিআরের একাধিক প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের ৮০ শতাংশই পাচার হয় ব্যবসা-বাণিজ্যের আড়ালে। শুধু বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের কারণেই বছরে সরকার কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই এই লুটপাটের অবসান হওয়া দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর