শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

এ কোন চক্রান্ত রোহিঙ্গা ইনফ্লাক্স

কামাল লোহানী

এ কোন চক্রান্ত রোহিঙ্গা ইনফ্লাক্স

রোহিঙ্গা নিপীড়ন ও বিতাড়ন এবং বিরাট সংখ্যায় তাদের নাফ নদ পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেওয়া, দীর্ঘদিনের সমস্যা। দশকের পর দশক ধরে মিয়ানমারে সামরিক শাসন বহাল থাকায় তাদের জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ-বিক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়ে আছে। দেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কয়েক বছর আগেও মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী নেতা অং সান সু চির ওপর আরোপিত বাধানিষেধ ও গণতন্ত্রহীনতার বিরুদ্ধে গুমরে গুমরে মরেছে। গৃহবন্দী সু চিকে আন্তরিকভাবে সমর্থন করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। চারদিকের রাজনৈতিক চাপ ও গণঅসন্তোষকে সামরিক জান্তা থোরাই কেয়ার করেছে। অবশেষে সামরিক জান্তা বিশ্ব প্রতিক্রিয়া ও চাপের কাছে মাথানত করতে বাধ্য হয় এবং সু চিকে মুক্ত করে দেয়। নির্বাচনে জয়ী হয় সু চির দল। কিন্তু বিদেশি নাগরিকের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকায় সু চি দেশের শাসনভার প্রত্যক্ষভাবে গ্রহণ করতে পারলেন না। সামরিক জান্তার সঙ্গে সমঝোতায় এসে তিনিই ‘ক্ষমতাধর’ হলেন, তবে সমর শাসকদের খবরদারি কঠোরভাবে জারি রইল। সু চি, স্টেট কাউন্সেলর হিসেবে দেশের প্রধান হয়েছেন বটে কিন্তু তাকে সামরিক নির্দেশনা মেনেই চলতে হচ্ছে। না হলে রাখাইন রাজ্যের জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদ করার সামরিক জান্তার এজেন্ডা কেন তিনি সরাসরি রূপায়িত করছেন। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে রাখাইন জনগোষ্ঠীকে তো সামরিক জান্তাই লেলিয়ে দিয়েছে। সু চি নির্বাচনে বিজয়ী হয়েও সামরিক বাহিনীর ‘হাতের পুতুল’ বনে গেছেন। সবারই জানা, সু চি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু এখন প্রশ্ন কী করে, কেন তাকে শান্তিতে ওই পুরস্কার দেওয়া হলো? চলতি রোহিঙ্গা নির্যাতন প্রসঙ্গে বিবিসি বাংলাকে সাক্ষাৎকার দিয়ে মিথ্যাচার করেছেন সু চি এবং সমরনেতারা যে যুক্তি প্রদর্শন করতেন, সেই যুক্তিই দেখিয়েছেন! উপরন্তু তিনি নাকি বলেছেন, ‘ওই সাংবাদিক যে মুসলিম তা জানলে আমি তাকে ইন্টারভিউই দিতাম না।’ এমন মুসলিমবিদ্বেষী কী করে ‘শান্তি পুরস্কার’ পান?

একটা প্রসঙ্গ জনগণকে মনে করিয়ে দিতে চাই, এই জনগণের নেত্রী বলে পরিচিত ও সামরিক বাহিনীর নানা বাধানিষেধে জর্জরিত সু চির মুক্তি দাবিতে এবং গণতন্ত্রহীন মিয়ানমারের শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিশ্বময় প্রবল আন্দোলন গড়ে উঠেছে, বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে সর্বত্র। আমরা বাংলার মানুষ তাকে প্রবল শ্রদ্ধায় তার মুক্তি ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণে কত না সমাবেশ-বিক্ষোভ করেছি। আজ দেখছি তা বুমেরাং হয়ে আসছে। সেই সু চিই সমর শাসকদের পুতুল সেজে ঘৃণ্য চক্রের কুিসত গণবিরোধী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতেও দ্বিধা করছেন না।

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চি শাসিত দেশ থেকে লাখো রোহিঙ্গা নারী ও শিশু সেনাবাহিনীর অত্যাচার-হত্যাযজ্ঞ-অগ্নিসংযোগে ভীতসন্ত্রস্ত ও বাস্তুহারা হয়ে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। সমস্যাটি আজ তৈরি হয়নি। ১৯৭৮ সাল থেকেই লাখ লাখ রোহিঙ্গা উখিয়া-কক্সবাজার অঞ্চলে এসে হাজির হচ্ছে। হয় জীবিত, নির্যাতিত, আহত হয়ে, না হয় নিহত হয়ে নদ কিংবা সাগরে ভাসতে ভাসতে। ছবিতে তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি, পিঁপড়ার মতো আসছে ওরা। ওরা কি সাধ করে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ও অভুক্ত জীবন আর আশ্রয়হীনতার অভিশাপ নিজেরা টেনে নিয়েছে, নাকি সু চি প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর ভয়ঙ্কর হত্যা পরিকল্পনার মিলিত প্রয়াসেই এই মানবতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির সৃষ্টি। সু চি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করে চলেছেন সেনা শাসনামলের মতোই। সেনাবাহিনী বলছে, মুসলিম রোহিঙ্গারাই ঘরবাড়িতে আগুন দিয়ে সেনাবাহিনীর ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে। তাই যদি হবে তবে ‘শান্তির দূত’ কী করছিলেন এত দিন অথবা এখন যা করছেন তাই বা যথার্থ বলে বিশ্ববাসীকে বোঝাবেন কী করে? বিশ্ববিবেক আজ সোচ্চার এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে কিন্তু মনে যেন অনেকের দ্বিধাদ্বন্দ্ব। কারণ বিশ্বটা আজ ‘আইএস আতঙ্কে’ শঙ্কিত। তেমন কোনো শক্তির উত্থান এই এলাকায় হলো কিনা? কিন্তু এখন সবাই বুঝতে পেরেছেন, কী সংকটই না সৃষ্টি করেছে সু চি প্রশাসন ও তার সহযোগী সেনাবাহিনী। তার যত দায় এসে পড়েছে বাংলাদেশের ওপর। ১৯৯২-৯৩-তে এমনই ‘ইনফ্লাক্স’ মোকাবিলা করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশ আজ এক দুর্যোগের সম্মুখীন হাওরের ঢলে, বন্যা প্লাবনে। হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন, লাখো দেশবাসী পানিবন্দী। আশ্রয় তো নেই-ই, খাবার জুটছে না ভালো করে এক বেলা। চিকিৎসা সংকট। আবার ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ নয়, একেবারে দগদগে ক্ষতচিহ্নের মতো দেখা দিয়েছে সেই পুরনো রোহিঙ্গা সমস্যা। এদের মধ্যে জামায়াত ঢুকে পড়েছে, সন্ত্রাসীরা আশ্রয় নিয়েছে, সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে ইতিপূর্বে।

এমনকি রামুর বৌদ্ধ বিহারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়াশীলরা হামলা চালিয়ে জগদ্বিখ্যাত ‘বুদ্ধ’ মূর্তিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। হাসিনা সরকার অবশ্য বৌদ্ধ বিহারের পুনর্নির্মাণ ও পুনর্বাসন করেছিল, সেজন্য জনগণের বাহ্বা ও আন্তর্জাতিক প্রশংসা কুড়িয়েছিল। কিন্তু মৌলিক যে মূর্তিটি ছিল সেখানে যুগ যুগ ধরে নানা ধর্মের মানুষের দর্শন ও শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তা তো আর নেই। তবে পুনর্নির্মিত মূর্তিটি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ বর্তমান সরকারের কাছে। এই যে লাখো রোহিঙ্গার অপ্রত্যাশিত আগমন মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে আবার। রোহিঙ্গারা দলে দলে, হাজারে হাজারে আসছে এদের ঠেকিয়ে রাখা কঠিন। মানবিক কারণে সরকার তাদের আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সরকারের ব্যবস্থাও তো সীমিত এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে একেবারেই অরাজক পরিবেশ সীমান্তে এবং দেশের অভ্যন্তরে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সীমান্ত প্রহরায় কিছুটা কিংকর্তব্যবিমূঢ়। নির্যাতিত, গুলিবিদ্ধ মানুষ বাস্তুহারা হয়ে যেভাবে সব হারিয়ে অসহাত্বের আর্তি নিয়ে নৌকায় ভেসে সীমান্তে এসে দাঁড়াচ্ছে, মানুষ হিসেবে মানুষকে দূরে ঠেলে দেওয়া কি সম্ভব?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুখ খুলেছেন তাদের পক্ষে। মাতা-পিতা, ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন আর সহায়সম্বল হারিয়ে রোহিঙ্গারা আসছে, ওদেরও তো অন্য কোনো পক্ষ নেই। মানবিক কারণেই ওদের আশ্রয় দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগে আমরাও কৃতজ্ঞ। তিনি জাতিসংঘকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলেছেন। অবশেষে জাতিসংঘ সেক্রেটারি জেনারেল তার ভুল শুধরেছেন। তাকে ধনব্যাদ। তবে বিবৃতি দিলেই হবে না। পদক্ষেপ নিতে হবে। নিরাপত্তা পরিষদে আলোচিত হলেও মিয়ানমারের স্বার্থবাদী বন্ধু চীনের ভেটোর ভয়ে কড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে কথা বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বিশ্বসমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। বলগাহীন রোহিঙ্গা মিছিল যেভাবে আসছে, সে তো আগের যে কোনো সময়টাকে ছাড়িয়ে যাবে।

সরকার ইদানীং এদের আবাসনের জন্য জমি নির্ধারণ করেছে। কিন্তু এর মধ্যেই সাড়ে ৪ লাখের মতো রোহিঙ্গা আশ্রিত হয়েছে। আরও আসছে পিঁপড়ার মতো। এদের ক্যাম্পে রেখে তালিকাভুক্ত করতে হবে। এত মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয় ও চিকিৎসা কি বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব? এখন রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। তাতে খাদ্য সংকট, সামাজিক সমস্যাও বাড়ছে। কারণ এরা তো কক্সবাজার, উখিয়া, রামু ইত্যাদি এলাকার মানুষের মতোই দেখতে। ভাষারও অনেকটা মিল রয়েছে। ফলে এরা স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে গেলে পৃথক করা যাবে না। তাদের নিয়ে অতীত যে অভিজ্ঞতা তা তো সুখদায়ক নয়। তাই এ কাজটি যথাশিগগিরই শুরু করতে হবে। মিয়ানমারের প্রতিবেশী চীন, ভারত, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ। এর মধ্যে চীন ও ভারতের স্বার্থ প্রসঙ্গে আমরা সবাই জানি। তাই জাতিসংঘ ছাড়াও নিজেদের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে প্রধান দুই প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলার। তাদের মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এদিকে ওআইসি তৎপর হয়েছে, দেরিতে হলেও তাদের পদক্ষেপ যেন শক্তিশালী ও প্রবল হয় তার জন্য তাদের সঙ্গেও আমাদের কূটনৈতিক পর্যায়ে কথা বলতে হবে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে বাংলাদেশের এই সংকট মুহূর্তে। এরা অতীতে বহুবার ছোট্ট দুর্ঘটনা, সহিংসতা অথবা অপমৃত্যুতে কত না কান্নাকাটি করে জারজার হয়ে গেছে। অবশ্যই এই বিপুল ইনফ্লাশে যে বিপন্নতা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে ওইসব দেশের ‘তাপ-উত্তাপ’ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন রাষ্ট্র যাতে সঠিক ঘটনা জানতে ও বুঝতে পারে, তার জন্য তাদের হাইকমিশনার এবং রাষ্ট্রদূতদের ডেকে ছবি দেখিয়ে, ব্রিফ করা এবং কক্সবাজার নিয়ে গিয়ে সীমান্ত পরিদর্শন করানো উচিত। তাদের নিজ চোখে রোহিঙ্গা ইনফ্লাক্স আর রাখাইন রাজ্যের আগুনের শিখা দেখানো উচিত। উচিত নৌকা দিয়ে নদী অথবা সাগরে ভীতসন্ত্রস্ত মানুষের কী বীভৎস জীবনসংগ্রাম তা দেখানো। আবার কত মানুষের মৃত্যু ঘটেছে এই পলায়ন জীবনে। ইউএনএইচসিআর আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সামান্য সাহায্য করছে বটে তবে ‘হাতির মুখে পোস্তদানা’, তাদের বিশাল আকারে আসতে হবে। না হলে এই প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি কেন? জাতিসংঘ থেকে লোকলস্কর খাদ্যপণ্য, তাঁবু, পানীয় জল, ওষুধপত্র, চিকিৎসক দল এমনকি পরিধেয় কাপড়-চোপড় পাঠাতে হবে। কারণ যারা শরণার্থী তারা তো সহায়সম্বলহীন হয়ে কোনোরকমে জীবন নিয়ে পৌঁছেছেন।

আমরা ধিক্কার জানাই, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যারা নিশ্চুপ বা মিয়ানমারকে সমর্থন করছে, ওরা কি অন্ধ, দেখতে পারে না গণমাধ্যমের রিপোর্ট। কেউ এদের ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে তৎপর নয়, তবে রাজনীতির কথায়, সরকারকে আক্রমণ করতে কুিসত আচরণ করেই চলেছে। আরাকান লিবারেশন আর্মির নাম করে যারা এই মহাসংকটকে শূন্যগর্ভ প্রমাণ করে সু চি ও সেনাবাহিনীর নির্মম সহিংসতাকে সমর্থন করে চলেছে পরোক্ষভাবে, দেশের অভ্যন্তরেও তাদের দেশ ও দেশবাসীর নির্দয় পরিস্থিতির কথা ভেবে এই কুিসত রাজনীতি করার প্রবণতা বন্ধ করার অনুরোধ জানাব। দেশ আমাদের সবার। যারা সরকারে যেমন তাদের নয়, তেমন সরকারের অকারণ সমালোচকদেরও নয়। এ কথা মনে রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের অংশীদার যে কোনো ব্যক্তি বা দলই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব প্রসঙ্গে উদ্বিগ্ন। তাই বলে একে তুরুপের তাস বানানোর চেষ্টা করে লাভ নেই। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ, জনগণের উদ্বেগ সৃষ্টি ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে সবারই ঐক্যপ্রয়াসে এর সমাধান করার চেষ্টা করা উচিত।

‘শান্তির দূত’ অং সান সু চি নাকি বলেছেন, যাদের কাছে নাগরিকত্বের সিলমোহর দেওয়া নথিপত্র আছে, তাদের তিনি ফেরত নিতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন তো একটাই— ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে, সবকিছু কেড়ে নিয়ে, পিটিয়ে, গুলি করে যাদের বিতাড়িত করা হচ্ছে, তারা ঠিক বেছে-খুঁজে নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে পেরেছেন? এ কেমন যুক্তিহীন কথা বললেন সু চি? এ থেকেই অনুমান করা যায়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে, যদি আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি হয়ও বা। চীন ও ভারত কী করে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর গণহত্যাকে সমর্থন জানাচ্ছে? অনেকে একাত্তরের সঙ্গেও এর তুলনা করছেন। নিরপরাধ নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। স্টাইলটা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মতোই কিন্তু আমরা মাতৃভূমি রক্ষা এবং শোষক পশ্চিমাদের হাত থেকে পুনরুদ্ধার করতেই লড়াই করছিলাম দেশের ভিতরে ও বাইরে। এ তো তা নয়। চীন তো একাত্তরেও পাকিস্তানকে সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছিল। এমন গণহত্যা বুঝি চীন তার মুক্তিসংগ্রামে এবং লংমার্চে মনে হচ্ছে প্রত্যক্ষ করেনি; আর যে ভারত মুক্তিযুদ্ধে একাত্তরের সমর্থক ছিল, সেই ভারত এখন আর নেই। সাম্প্রদায়িকতার রক্তমাখা হাতে এখন শাসিত হচ্ছে মোদির বিজেপির কল্যাণে। সুতরাং এই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি বিজেপি সরকার কেন বাংলাদেশকে সমর্থন করবে? সামনে আমাদের নির্বাচন, তাই ভারতের চেহারা তো এখনই প্রকাশ পাচ্ছে। তাই সাধু সাবধান!

                        লেখক : সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।

সর্বশেষ খবর