শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

চালের দাম কমছে

চালকল মালিকদের শুভবুদ্ধি

বাজার অর্থনীতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা খুবই সীমিত। তবে আমাদের মতো দেশে যেখানে সুনীতির সংকট সর্বক্ষেত্রে, সেখানে সরকারের দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই বললেই চলে। দেশে চালের দাম হঠাৎ লাগামহীন বৃদ্ধির পেছনে যৌক্তিক কারণ না থাকলেও চালকল মালিকদের অতি মুনাফাখোরি মনোভাবের কারণে লাখ লাখ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। এ কথা ঠিক, হাওর এলাকায় আগাম বন্যায় কয়েক লাখ টন ধান কম উৎপাদন হয়েছে। বন্যার কারণেও ক্ষয়ক্ষতির ধকল পড়েছে ধান উৎপাদনে। তবে দেশে যে চাল মজুদ রয়েছে তা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট। এর পরও বিদেশ থেকে চাল আমদানির গতি বাড়াতে আমদানি শুল্ক প্রায় শূন্যের পর্যায়ে কমিয়ে আনা হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে চালের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ার সুযোগ না থাকলেও মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল নামার সঙ্গে সঙ্গে চালের বাজারে দেখা দিয়েছে বিসংবাদ। আশার কথা, তিন মন্ত্রীর সঙ্গে চালকল মালিকদের বৈঠক এবং মজুদদারদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের পর চালের দামের ঊর্ধ্বগতিতে লাগাম পরানো সম্ভব হয়েছে। পাইকারি বাজারে দাম ইতিমধ্যে কেজিপ্রতি ৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। খুচরা বাজারে তাত্ক্ষণিকভাবে মূল্যহ্রাসের সুফল অনুভূত না হলেও আশা করা যাচ্ছে দু-এক দিনের মধ্যে সেখানেও সুফল দেখা যাবে। আমরা চালকল মালিকদের এই সুমতিকে স্বাগত জানাই এবং আশা করতে চাই বন্যা ও রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা নিয়ে দেশ যখন এক সংকটাপন্ন অবস্থা অতিক্রম করছে তখন ব্যবসায়ী সম্প্রদায় অতি মুনাফার প্রবণতা থেকে নিবৃত্ত থাকবেন। চালের মূল্যস্ফীতির প্রবণতা ঠেকাতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিঃসন্দেহে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা। ব্যবসায়ী সম্প্রদায় নিজেরা মূল্যস্ফীতি রোধে যত্নবান হলে এমন নেতিবাচক সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হতো না। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করেন মুনাফার জন্য এটি কোনো অস্বাভাবিক প্রবণতা নয়। কিন্তু মানুষের দুঃখ-কষ্টের কারণ ঘটায় যে অতি মুনাফাখোরি মনোভাব, তা কোনোভাবেই কাম্য হওয়া উচিত নয়। এ ব্যাপারে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। ব্যবসার নামে যারা মানুষের দুঃখ-কষ্ট বাড়াচ্ছেন তাদের সংযত হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর