শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাড়ছে ব্যক্তির স্বাস্থ্য ব্যয়

সরকারি অবদান হ্রাস দুর্ভাগ্যজনক

স্বাস্থ্য পরিচর্যায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চমক দেখিয়েছে স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে। প্রসূতি ও শিশুমৃত্যু রোধেও বাংলাদেশের সাফল্য অন্যদের জন্য অনুকরণীয়। জন্মশাসনে বাংলাদেশের সাফল্য প্রশংসার দাবিদার। তবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের নাগরিকদের নিজস্ব ব্যয় সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য খাতে দেশবাসীর জন্য যে অর্থ ব্যয় হয় তার মাত্র ২৩ ভাগ ব্যয় করে সরকার। বাকি ৬৭ ভাগ ব্যয় করে ব্যক্তি নিজে। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেশী সব দেশে সরকারি ব্যয় অনেক বেশি। বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টস ১৯৯৭-২০১৫ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয় : বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু স্বাস্থ্যব্যয় বর্তমানে ৩৭ মার্কিন ডলার টাকার হিসাবে যার পরিমাণ ২ হাজার ৮৮২ টাকা। ২০১২ সালের হিসাবে মাথাপিছু স্বাস্থ্যব্যয় ছিল ২৭ ডলার। মাথাপিছু স্বাস্থ্যব্যয় বাড়লেও এতে সরকারের অংশ আগের চেয়ে কমেছে। এ খাতে ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যয় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ২০১২ সালে যেখানে মোট স্বাস্থ্যব্যয়ের ৬৩ শতাংশ ব্যক্তি বহন করত নিজের পকেট থেকে তার পরিমাণ বেড়ে ৬৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ সরকার এখন জনগণের স্বাস্থ্যব্যয়ের মাত্র ২৩ শতাংশ বহন করছে। এনজিও ও দাতাসংস্থাগুলো বহন করছে ১০ শতাংশ। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মালদ্বীপে ব্যক্তি স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের ১৮ শতাংশ ব্যয় করে, ভুটানে এর পরিমাণ ২৫, নেপালে ৪৭, পাকিস্তানে ৫৬ এবং ভারতে ৬২ শতাংশ। সন্দেহ নেই, স্বাস্থ্য খাতে সরকারি ব্যয় বরাদ্দ প্রতি বছরই বাড়ছে। কিন্তু সেবার মান বৃদ্ধি না পাওয়ায় তা সকলি গরলি ভেলে পরিণত হচ্ছে। ওষুধের দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি এবং চিকিৎসকদের রোগী দেখা ফি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তি পর্যায়ে খরচ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তি পর্যায়ের ব্যয় বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। অনেক পরিবারের মোট আয়ের এক উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় হয় স্বাস্থ্য খাতে; যা দারিদ্র্যের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। জনস্বার্থে এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর নজরদারির বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর