রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন

বাহালুল মজনুন চুন্নু

সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন

৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পৃষ্ঠায় ‘নাফ নদে লাশের সারি’ শিরোনামের লিড নিউজে উপকূলে ভেসে আসা একটি শিশুর উপুড় হয়ে পড়ে থাকা লাশের ছবি দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। কী কোমল মায়াময় চেহারা শিশুটির! হৃদয়ের গহিনে এক ধরনের চিনচিনে ব্যথা অনুভব করছিলাম। মানুষ, মানবতা, মনুষ্যত্ববোধ এই শব্দগুলোর শূন্যতাই মনে পড়তে লাগল বার বার। জাতিগত নির্মূলের শিকার থেকে রক্ষা পেতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা করা প্রায় শত রোহিঙ্গা শিশু, নারী, পুরুষের লাশ ঢেউয়ে ভেসে উপকূলে আছড়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে মানবতা। গত মাসের ২৬ তারিখে ‘আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি’ যারা ‘আরসা’ নামে পরিচিত তারা একযোগে মিয়ানমারের ৩৪টি সামরিক চৌকিতে আক্রমণ করে। এতে ‘আরসা’র সাত শতাধিক সদস্য অংশ নিয়েছিল যাতে সামরিক বাহিনীর  ১২ জন সদস্য ও ৮৭ আরসা সদস্য নিহত হয়েছিল। এর পর থেকেই মিয়ানমার সামরিক বাহিনী শুরু করেছে রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞ। পাহাড়, জঙ্গল ও ‘আরসা’র নিজস্ব পোশাক না থাকায় সামরিক বাহিনী অনেক অসহায় আর নিরপরাধ রোহিঙ্গার ওপর আরাকান বিদ্রোহী জঙ্গি সন্দেহে সাঁড়াশি আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। আকাশপথেও গানপাউডার ছিটানো হচ্ছে, যার দাবানলে জ্বলছে রাখাইনের রোহিঙ্গারা। বসতবাড়ি জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া হচ্ছে। ধর্ষণ, লুটপাটের সঙ্গে গণহত্যায় মেতে উঠেছে সামরিক বাহিনী। মেশিনগান আর বন্দুকের ছোড়া গুলিতে অসংখ্য রোহিঙ্গা হয় নিহত হচ্ছে, নতুবা ক্ষতবিক্ষত শরীরে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে প্রাণ হারাচ্ছে সাগরে। রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূলের এই প্রচেষ্টা নতুন কিছু নয়। গত শতাব্দীর ষাটের দশক থেকেই এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কখনো কখনো তা মারাত্মক রূপ ধারণ করে। যেমন এই এখন। মিয়ানমার সরকার এদের নাগরিক বলে স্বীকার করতে নারাজ, যদিও একসময় তাদের ভোটাধিকার ছিল। সংসদ এমনকি সরকারের মন্ত্রী হিসেবেও কাজ করেছে রোহিঙ্গারা। সপ্তম শতাব্দীতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বার্মায় আসা শুরু করেছিল। এরা মূলত ছিল আরবের নাবিক, ব্যবসায়ী ও যাযাবর। পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে আরাকানে তথা বর্তমান রাখাইন প্রদেশে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ গোষ্ঠীতে পরিণত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-উত্তর সময়ে এদের নেতৃবৃন্দ মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে দেখা করে রাখাইন প্রদেশকে পাকিস্তানের সঙ্গে সংযুক্ত করতে চেয়েছিলেন। আটচল্লিশে ব্রিটিশের কাছ থেকে মিয়ানমার স্বাধীনতা লাভ করলে রোহিঙ্গারা পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে ধীরে ধীরে সশস্ত্র সংগ্রামের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ষাটের দশকে সামরিক জান্তা নে উইন ক্ষমতা দখল করে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দমনের নামে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন শুরু করেন। সেই থেকে দীর্ঘ সময়ব্যাপী চলে আসছে হত্যা-নিপীড়ন-বিতাড়ন। ভোটাধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার সব সুযোগ কেড়ে নেওয়া হয়। এমনকি দেশটি ১৩৫টি জাতিগোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু হিসেবে স্বীকৃতি

দিলেও রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতি দেয়নি। দীর্ঘদিন চলে আসা এ সমস্যার সমাধানে মানুষ আশার আলো দেখেছিল যখন শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি রাষ্ট্রটির ‘ডি ফ্যাক্টো’ সরকারপ্রধান কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। কিন্তু দেশটি বহুদিন পর গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ফিরে এসেছে বলে দাবি করা হলেও আসলে দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর কথা বলার মতো সাহস ও যোগ্যতা এখনো কোনো রাজনৈতিক দলের হয়নি বলেই প্রতীয়মান হয়। গণতন্ত্রের নামে সেখানে মূলত সেনাতন্ত্রই কায়েম রয়েছে। এ বিষয়ে সেন্টার ফর সাউথইস্ট এশিয়ার নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক নেগিনপাও কিপজেন বলেছেন, সু চি নিজে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে করে ক্লান্ত হয়ে শেষাবধি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে একটি ‘প্যাচ-আপ’-এর মাধ্যমে ক্ষমতা পেলেও দেশটির সংখ্যাগুরু বার্মিজদের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে ভোট হারাতে নারাজ। ফলে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তার মাথাব্যথা সামান্যই। অথচ এ সমস্যার সমাধান মূলত ওই দেশের সরকার, সেনাবাহিনী ও সুশীলসমাজের ওপরই নির্ভর করছে। ’৭৮ সালে জেনারেল নে উইন রোহিঙ্গাদের দমন করতে ‘অপারেশন কিং ড্রাগন’ পরিচালনা করেন। ওই সময় এ দেশের সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান সৌদি আরবসহ মুসলিম বিশ্বে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াতে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সামরিক সরকারের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেন। অবশ্য লোক দেখানো মানবিকতার আড়ালে অন্য এক উদ্দেশ্য যে তার ছিল, তা আজ জাতির কাছে স্পষ্ট। জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের বেনামি জঙ্গি সংগঠন হুজি এবং পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা, জইশ-ই-মুহাম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্রশস্ত্রের জোগান দিয়ে থাকে, যা বিভিন্ন সময় সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে। মিনি পাকিস্তান বানানোর স্বপ্নে বিভোর সামরিক শাসক জিয়া তাই মানবতার আড়ালে এদের সে কাজে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। আর তখন থেকেই রোহিঙ্গা ইস্যুটি এ দেশের জন্য বিষফোঁড়া হিসেবে দেখা দেয়। এদের অনেকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক অপকর্ম করে এ দেশের সুনামহানি ঘটিয়েছে, যা বিভিন্ন সময় পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে। বর্তমান আরসার প্রধান আতাউল্লাহ আবু আমার জুনুনির জন্ম পাকিস্তানে, বেড়ে উঠেছেন সৌদি আরবে আর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন আফগানিস্তানে। কিছুদিন আগে মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উ থং টাং ভারত সফরে গিয়ে অভিযোগ করেছেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে পাকিস্তানের উগ্র-সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার যোগাযোগ আছে এবং বাংলাদেশের সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় তারা একটি শক্তিশালী ঘাঁটি তৈরিতে সমর্থ হয়েছে। যদি এটি হয়ে থাকে তবে তা আমাদের জন্যও সত্যিই বিপদের কথা। সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের পালে যেন হাওয়া লেগেছে। আত্মগোপনে থাকা জামায়াত-শিবির সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ইস্যু থেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে এরা। পাকিস্তানপন্থি এই গোষ্ঠীর তৎপরতায় রোহিঙ্গা নিরপরাধ নারী-পুরুষ শরণার্থীর সঙ্গে মিশে গিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রোহিঙ্গারা যদি এ দেশে অনুপ্রবেশ করে তবে শান্ত এ দেশে যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে, তা বহুগুণ বেড়ে যাবে। রোহিঙ্গা সশস্ত্র বিদ্রোহীরা যদি মিয়ানমার থেকে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কিন্তু যদি এরা এ দেশকে এ কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা চালায়, তবে তা আমাদের নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি। প্রশ্নটি এখানেই। বিতর্ক এখানেই। একদিকে মানবিকতা ও অন্যদিকে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে সংকট-সংশয় এখানেই।

তবে সমস্যাটি বেশ দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিচ্ছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার। নিরপরাধ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়, ত্রাণসহায়তাসহ যাবতীয় সাহায্য-সহযোগিতা করতে যেমন কুণ্ঠিত নয় সরকার, তেমনি অস্ত্র, মাদকসহ সন্ত্রাসীরা ঢুকে পড়ছে কিনা সে বিষয়েও সরকার যথেষ্ট সতর্ক। বিভিন্ন সময় সামরিক নির্যাতনের হাত থেকে পালিয়ে আসা ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এ দেশে বসবাস করছে। আর এবারের সামরিক অভিযানে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা এ দেশে প্রবেশ করেছে। এত বিপুল জনসংখ্যাকে দীর্ঘদিন লালন-পালন করা এ দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। তা ছাড়া এই অনুপ্রবেশ দেশের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। এর পরও ঝুঁকি নিয়ে হলেও মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছে বর্তমান সরকার। বঙ্গবন্ধুকন্যা নিজে ছুটে গেছেন শরণার্থী শিবিরে তাদের সান্ত্বনা ও সহযোগিতার আশ্বাস দিতে। ইতিমধ্যে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীর পাহাড়সহ আশপাশের প্রায় ২ হাজার একর বনভূমিতে গড়ে তোলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন আশ্রয়শিবির, দেওয়া হচ্ছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা ও চিকিৎসা সুবিধা। এ দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে আশ্রয়শিবিরে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য পরিচয়পত্র দেওয়ার কাজ শুরু করেছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

আশার কথা শুধু বাংলাদেশ নয়, রোহিঙ্গা সমস্যায় আন্তর্জাতিক মাধ্যমগুলো বেশ সরব। বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক অঙ্গনও বেশ উদ্বিগ্ন। যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ এ সংকট সমাধানে জোরালোভাবে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়েছে। ওআইসিভুক্ত মুসলিম দেশগুলোও এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান জায়েদ রাদ আল হোসাইন মিয়ানমারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর ‘সিস্টেম্যাটিক আক্রমণ’ চালাচ্ছে মিয়ানমার। তিনি একে জাতি নির্মূল বা এথনিক ক্লিনজিং বলে আখ্যায়িত করেছেন। জাতিসংঘ ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের তত্ত্বাবধানে একটি কমিশন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের সমস্যা সমাধানে সুপারিশমালা দিয়েছে। কিন্তু ভারত ও চীনের মতো দেশগুলো মিয়ানমার সরকারকে যেভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক মিয়ানমার সফরে তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে নীরব ছিলেন। উপরন্তু এ সময় ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে দেশটি। ভারতের এই নীতি নতুন কিছু নয়। এই সমর্থন এতটাই জোরালো যে, ১৫ বছর ধরে ভারত কখনো সরকারিভাবে রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহারই করেনি। আমেরিকা বরাবরই এ বিষয়ে দ্বিমুখী ভূমিকা পালন করে আসছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিক দিকের কথা বলছে, আবার অস্ত্র ব্যবসার কারণে মিয়ানমারকে সমানে মদদ দিয়ে চলেছে। চীনও মিয়ানমার সরকারকে সমর্থন করছে। এ ইস্যুতে রাশিয়ার সমর্থন আদায়েরও চেষ্টা করছে মিয়ানমার। এমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও বর্তমান সরকার এ সমস্যার সন্তোষজনক সমাধানের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে সামনে এগোচ্ছে। কূটনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের জন্য মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। জাতিসংঘের বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনায় মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন দেশ ও জোটকে অনুরোধ জানাচ্ছে, যাতে সন্তোষজনক সাড়া মিলছে। নিউইয়র্কে শুরু হয়েছে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশন। ওই অধিবেশনে গুরুত্ব পাচ্ছে রোহিঙ্গা ইস্যুটি। নিরাপত্তা পরিষদেও এ নিয়ে তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। বাংলাদেশ এ সংকটের একটা স্থায়ী সমাধান চায়। সংগত কারণেই এ দেশে অবস্থানরত সব রোহিঙ্গাকে নিজ বাসভূমে ফিরিয়ে দিতে চায়। এ সমস্যা সমাধানের চূড়ান্ত দায়িত্ব বাংলাদেশের হাতে নেই, এ দায়িত্ব মিয়ানমারের। নাগরিকের পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে পুনর্বাসিত করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই। এ জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমারের ওপর প্রবল চাপ প্রয়োগ করতে হবে। মিয়ানমার যদি এ সুপারিশমালা বাস্তবায়নের দিকে যায় তবে আশা করা যায়, রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান ঘটবে। কিন্তু যদি তারা তা না করে তবে প্রয়োজনে কর্মপন্থায় সাহসী পরিবর্তন এনে অবরোধ আরোপ, সামরিক জোট গঠনসহ বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। তবে নমনীয়তার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধানই সবার কাম্য।

লেখক : সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

সর্বশেষ খবর