বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

যারা কোরআন শেখে ও শেখায় তারাই শ্রেষ্ঠ

আল্লামা মাহমূদুল হাসান

হজরত মুহাম্মদ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদিসে বলেছেন— ‘যারা পবিত্র কোরআন শেখে ও শেখায় তারাই শ্রেষ্ঠ।’ উপরে বর্ণিত হাদিসের সারমর্ম হচ্ছে, প্রিয় নবী বলেছেন— হে ইলমে দীনের ধারক-বাহক! দুনিয়ার লক্ষ কোটি পদ একত্রিত করলেও তোমার পদের ধারেকাছেও কেউ যেতে পারবে না। দুনিয়ার নির্বোধ, অবিবেচক ব্যক্তিরা স্বার্থের বশীভূত হয়ে কিংবা হিংসার কারণে কিংবা ধর্মদ্রোহী হওয়ার ফলে তোমাদের বেকার বলতে পারে। কিন্তু আমি মুহাম্মদ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, যাকে শ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে, শ্রেষ্ঠ নবী হিসেবে মহান আল্লাহতায়ালা দুনিয়াতে পাঠালেন, ময়দানে হাশরে একমাত্র আমার সুপারিশেই মানুষের মুক্তি মিলবে, আমি বলে যাচ্ছি, যারা কোরআন শিখবে, শিখাবে, অনুশীলন করবে, মানুষের সম্পর্ক তার স্রষ্টার সঙ্গে করার জন্য প্রচেষ্টা চালাবে, সেটা মুখে হোক, লেখনী দ্বারা হোক যে কোনোভাবেই হোক, তারা আমার ও আল্লাহর দৃষ্টিতে দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি।

জেনে রেখ! পৃথিবীতে শয়তান সবচেয়ে বেশি ভয় করে একজন দীনি শিক্ষককে, দীনের আলেম-ফকীহকে। যেমন বলা হয়েছে— শয়তানের পক্ষে এক হাজার আবেদকে বিভ্রান্ত করা যতটা না কঠিন তার চেয়ে কঠিন একজন ফকীহকে বিভ্রান্ত করা। এ জন্য ইমাম গাজ্জালী (রহ.) সত্যই বলেছেন, যদি পৃথিবীতে তুমি কাউকে দেখ যে, সে দীনি শিক্ষার বিরোধিতা করে, আল্লাহর রসুলের শিক্ষার বিরোধিতা করে, তাহলে বেশি দলিল-প্রমাণের প্রয়োজন নেই যে, সে শয়তানেরই চেলা। দলিল-প্রমাণের প্রয়োজন নেই এ জন্য যে, শয়তান সবচেয়ে বেশি লেগে থাকে আলেম, হাফেজ ও ইমামের বিরুদ্ধে। কারণ সে জানে যদি এদের বিভ্রান্ত করা যায়, তাহলে পুরো জাতিকে বিভ্রান্ত করা অতি সহজ। শিক্ষাকে ধ্বংস করার পথ হলো শিক্ষককে ধ্বংস করে দেওয়া। শিক্ষক না থাকলে শিক্ষার প্রসার ঘটবে না। এ জন্যই আল্লাহপাক সতর্ক করতেন নবীকে এবং নবীর ওয়ারিশকে লক্ষ্য করে বলেছেন জেনে রাখ; পৃথিবীর যে যাই বলুক যদি তোমরা সত্যিকার মুসলিম হও, আর মুসলিম হিসেবেই বেঁচে থাকতে চাও, মুসলিম ঐতিহ্য রক্ষা করতে চাও, তাহলে যে কোনো মূল্যে তোমার শিক্ষাব্যবস্থাকে রক্ষা করতে হবে।  পড়ার মাধ্যমে, অনুশীলনের মাধ্যমে বা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সহি বুঝ দান করুন এবং খালেছ দিলে ইলমে দীনের প্রচার-প্রসার ও উন্নতি সাধনের তাওফিক দান করুন!

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর