বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই

এনসিটিবির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এনসিটিবি নিম্নমানের কাগজ দিয়ে পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ দেওয়ায় মুদ্রণশিল্পের মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের কাগজে বই ছাপার কাজ চললে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেবে এমন আশঙ্কাও করছেন তারা। শিক্ষার্থীদের হাতে বই সময়মতো পৌঁছে দেওয়া এবং সে বইয়ের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে এমন কথাও বলছেন তারা। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে এনসিটিবির বই নিম্নমানের কাগজে ছাপা হওয়ার যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তাতে উত্কণ্ঠিত না হয়ে পারা যায় না। বিনামূল্যে পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া সরকারের একটি কল্যাণমুখী প্রকল্প। এ উদ্দেশ্যে বিপুল অর্থও ব্যয় করা হচ্ছে সরকারি তহবিল থেকে। দেশে মানসম্মত কাগজ উত্পাদন হলেও এনসিটিবির পাঠ্যবই ছাপানোর কাজে কাগজ সরবরাহে এমন সব কাগজ কলকে বেছে নেওয়া হয়েছে যারা মানসম্মত কাগজ উত্পাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। কারণ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত যারা এক হাজার টন পাল্পও আমদানি করেনি তাদের দেওয়া হয়েছে শত শত টন কাগজ সরবরাহের কাজ। মানহীন কাগজে বই ছাপা হওয়া সত্ত্বেও তা দেখার কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বইয়ের অর্ধেক বই সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী ইতিমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও তা মাঠপর্যায়ে পৌঁছেনি। এনসিটিবির পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে সময়মতো বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। কাগজের মান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই বই সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হবে। তবে বাস্তব অভিজ্ঞতায় প্রমাণিত হয়েছে দরপত্রের বিধি নির্দেশের পরোয়া না করে গত কয়েক বছর যাবৎ নিম্নমানের কাগজে বই ছাপা হচ্ছে। এগুলো দেখার দায়িত্ব যাদের তারা নিজেদের বিবেককে জিম্মি করে রাখায় যাচ্ছেতাই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। পাঠ্যবই যেহেতু ছাপা হয় দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায় সেহেতু নির্দিষ্ট মান বজায় রাখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে যত্নবান হতে হবে। কাগজ সরবরাহের জন্য যাতে মানসম্মত কাগজ উত্পাদনকারী কাগজ কলগুলো কার্যাদেশ পায় সেদিকে নজর রাখাও জরুরি। বইয়ের কাগজ, ছাপার মান, বাঁধাই সব কিছু যাতে মানসম্মত হয় সেদিকে নজর রাখা সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে কোনো হেলাফেলা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

সর্বশেষ খবর