সোমবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আবারও ব্যর্থ নিরাপত্তা পরিষদ

চীন রাশিয়ার ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সহিংসতা নিরসন, রাখাইনে মানবিক সহায়তায় শর্তহীন অবাধ প্রবেশাধিকার এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে পরিষদের সদস্যরা একমত হলেও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব নিতে ব্যর্থ হয়েছে। ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচ দেশের মধ্যে চীন ও রাশিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার বিরোধিতা করায় নিরাপত্তা পরিষদকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আবারও হোঁচট খেতে হলো। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তিনি বলেন, শরণার্থী সংকট নিরসনে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোকে অবশ্যই মিয়ানমারের সামরিক ও বেসামরিক নেতাদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে নিরাপত্তা পরিষদকে তৈরি করতে হবে একটি রোডম্যাপ। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই পরিষদ শুক্রবার মধ্যরাতের বৈঠকে কফি আনানকে মিয়ানমারের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে তিনটি বিষয়ে ঐকমত্য হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো প্রস্তাব পাস করতে পারেনি চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে। এর আগে গত ২৮ আগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর তিনবার বৈঠক করে নিন্দা ও উদ্বেগ জানানো ছাড়া কোনো কড়া ব্যবস্থা নিতে পারেনি নিরাপত্তা পরিষদ। ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা নিধন বন্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের পক্ষপাতী হলেও তা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয় ঐকমত্যের অভাবে। চীন ও রাশিয়ার আপত্তির কারণে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কড়া নিন্দা প্রস্তাব কিংবা সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হলেও বৈঠকে সহিংসতা বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের নিরাপদে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে যে ঐকমত্য প্রকাশ পেয়েছে তা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। সামরিক জান্তা নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমারের বর্বর সেনাবাহিনী যে রাখাইনে সহিংসতা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে সে সম্পর্কে কেউই দ্বিমত পোষণ করেনি। আঞ্চলিক ও বিশ্বশান্তির স্বার্থে এই বর্বরতা থামাতে সব দেশকেই মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

সর্বশেষ খবর