বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

পুলিশের সেবা নিশ্চিত হোক

প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণেও নজর দিতে হবে

সময়ের চাহিদা পূরণে দেশের পুলিশ বাহিনীর পরিসর বাড়ছে। বিশেষায়িত দায়িত্ব পালনে গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন নতুন ইউনিট। নাগরিকদের সেবা বাড়াতে এসব উদ্যোগ নেওয়া হলেও আসল কাজটিই নিশ্চিত হচ্ছে না। বাড়ছে না সেবার পরিসর। পুলিশের অবয়ব বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন ইউনিট সৃষ্টির যৌক্তিকতা নিয়ে কোনো সংশয়ের অবকাশ নেই। কিন্তু ইউনিটগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং এক ইউনিটের সঙ্গে আরেক ইউনিটের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের কারণে পুলিশের মূল শক্তি তথা অপরাধ দমনের সক্ষমতা হোঁচট খাচ্ছে। বর্তমানে ৩৬টি স্বতন্ত্র ইউনিট থাকলেও খুব শিগগির এই বহরে যুক্ত হচ্ছে গাজীপুর মহানগর, রংপুর মহানগরসহ আরও চারটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে এবং অপরাধের বহুমাত্রিকতা মোকাবিলায় নতুন নতুন ইউনিট যাত্রা শুরু করলেও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে ভোক্তারা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না। ইউনিটগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে সেবার মান বাড়ার বদলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে হ্রাস পাচ্ছে। অপরাধ দমনে নতুন ইউনিট গঠন করায় পুরনো ইউনিটের কার্যক্রম শূন্যের কোটায় চলে যাওয়ার নজির যেমন রয়েছে, তেমন নতুন বেশ কয়েকটি ইউনিটের কার্যক্রম শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। স্মর্তব্য, গত আট বছরে পুলিশ বাহিনীতে নতুন ছয়টি বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করা হয়েছে। নানা সীমাবদ্ধতার শিকার হয়ে এর বেশির ভাগই চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। অনেক ইউনিটে চাহিদার অর্ধেকেরও কম জনবল দিয়ে চলছে তাদের কার্যক্রম। বেশির ভাগ ইউনিটেরই নিজস্ব ভবন না থাকায় ভাড়াবাড়িতে চলছে তাদের কার্যক্রম। অপরাধ তদন্তে এতকাল সিআইডির ভূমিকা ছিল মুখ্য। পিআইবি গঠনের পর সিআইডির হাতে কাজ নেই বললেই চলে। পুলিশ ও র‍্যাবের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ লাভ করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তির জন্য সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হলে পুলিশের শক্তি ও সামর্থ্য দুটিই যেমন বাড়াতে হবে তেমনি কর্তৃপক্ষীয় নজরদারি বাড়ানোর বিষয়টিও প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার।  পুলিশের সদস্য সংখ্যা ও আনুষঙ্গিক উপকরণ তথা সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি আধুনিক প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণের দিকেও নজর দিতে হবে।  সর্ব পর্যায়ে জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করা দরকার। পুলিশ সদস্যদের গুণগতমান বৃদ্ধিতেও উদ্যোগ নিতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর