বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা সমস্যা

বিশ্ব সম্প্রদায়ের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ সে দেশের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনকেও বিব্রত অবস্থায় ফেলেছে। চারদিকের সমালোচনার মুখে চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার এতকালের মিয়ানমার তোষণ নীতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অচিরেই এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যৌথ প্রস্তাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। রোহিঙ্গা সমস্যার দ্বিপক্ষীয় নিষ্পত্তির যে কথা এতদিন বলে আসছিল বেইজিংয়ের শাসকরা তা থেকে সরে আসার আভাস মিলেছে চীনের এই নতুন অবস্থানে। চীনের এই নতুন অবস্থান রাশিয়াকেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে নমনীয় হতে উদ্বুদ্ধ করবে। আশা করা হচ্ছে, চীন ও যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব দিলে তা পরিষদের সব স্থায়ী সদস্যের সমর্থন নিশ্চিত করবে। এ সংক্রান্ত উদ্যোগ সমস্যার সমাধানে পথ দেখাবে এমনটি প্রত্যাশিত। মিয়ানমার থেকে ১০ লাখ রোহিঙ্গার দেশত্যাগ বাংলাদেশকে গভীর সংকটে ফেলেছে। মানবতার ডাকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও তা দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য বিপদ ডেকে এনেছে। বাংলাদেশ যখন বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে এক দশকের মধ্যে সব চেয়ে বেশি খাদ্য ঘাটতির মোকাবিলা করছে, তখন ১০ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে বিরাজ করছে। আশার কথা, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেরিতে হলেও কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জেগে উঠছে। ইতিমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বর্মী সেনাবাহিনী ও সেনাপতিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সম্মেলনে ১৭৩টি দেশের পার্লামেন্ট প্রতিনিধিরা মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের রক্ষায় জাতিসংঘের সেফ জোন প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে। স্মর্তব্য, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্যকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রস্তাব দেন। সামরিক জান্তার শাসনে সভ্যতা, ভব্যতা ও মানবিকতা বিসর্জনকারী মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সোচ্চার হতে হবে। সমস্যার সম্মানজনক সমাধানে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সব রোহিঙ্গাকে স্বদেশে ফেরত নিতে হবে। তাদের নিরাপত্তার জন্যও নিতে হবে ব্যবস্থা। বিশ্বশান্তি এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে এ প্রশ্নে একাট্টা হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর