শিরোনাম
শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মাতা-পিতার অধিকার

মুফতি হেলাল উদ্দীন হাবিবী

মাতা-পিতার অধিকার

পৃথিবীতে মায়ের মতো আপন কেউ নেই। একটি নবজাতক সন্তান যখন ভূমিষ্ঠ হয়ে সর্বপ্রথম এই সুন্দর পৃথিবীর আলোর মুখ দেখে, শত কষ্ট ব্যথা-যন্ত্রণা সহ্য করার পরও তখন সর্বাধিক আনন্দিত হন মা।  আদরের সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ভুলে যান সব দুঃখ-যন্ত্রণা। সন্তান ভূমিষ্ঠের পর তার লালন-পালনের সার্বিক দায়িত্ব মাকেই বহন করতে হয়। কত রাত মা সন্তানের জন্য নির্ঘুম কাটিয়ে দেন। শত প্রতিকূলতার মাঝেও সন্তানকে বুকের মাঝে আগলে রাখেন। আর বাবা তো বটবৃক্ষের ন্যায় উভয়কে মমতার ছায়ায় আবৃত রাখেন এবং সর্বদা সচেষ্ট থাকেন তাদের প্রয়োজন পূরণে। পৃথিবীতে নিখাদ ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা একমাত্র মা-বাবার কাছেই পাওয়া যায়। যদি কেউ মা-বাবার চেয়ে অধিক ভালোবাসা দেখায় তবে বুঝতে হবে সেটা প্রকৃত ভালোবাসা নয়।

মহান রাব্বুল আলামিন মাতা-পিতাকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করেছেন। পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে তাঁর ইবাদতের সঙ্গে সঙ্গে মাতা-পিতার সেবা ও আনুগত্যের নির্দেশ প্রদান করেছেন। সুতরাং আল্লাহতায়ালার ইবাদত করা যেমন ফরজ, মাতা-পিতার খেদমত করাও তেমন ফরজ। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করবে না; মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। তাদের একজন বা উভয়জন যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয় তবে তাদের ব্যাপারে ‘উফ’ শব্দটিও বল না এবং তাদের ধমক দিও না। তাঁদের সঙ্গে বিনম্রভাবে কথা বল। আর তাঁদের জন্য মমতার ডানা বিছিয়ে দাও এবং বল, ‘হে আমার প্রতিপালক, তাদের প্রতি দয়া করুন যেমনটি তাঁরা করেছে আমার শৈশবে’। (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৩-২৪)।

মাতা-পিতার অধিকারের ব্যাপারে মহান আল্লাহতায়ালা কোরআনের অন্যত্র ইরশাদ করেন, আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তাকে গর্ভধারণ করেছেন। আর দুই বছর পর্যন্ত স্তন্যদান করেছেন। সুতরাং তোমরা আমার এবং তোমার মাতা-পিতার কৃতজ্ঞতা আদায় কর। আমার কাছেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (সূরা লুকমান, আয়াত ১৪)।

হজরত মুগিরা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহতায়ালা তোমাদের ওপর হারাম করেছেন, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া। (বোখারি)।

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, মাতা-পিতাই তোমার জান্নাত এবং জাহান্নাম। (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)।

প্রিয় পাঠক! ইসলাম পিতার তুলনায় মাতাকে তিনগুণ বেশি অধিকার প্রদান করেছে।  মা যদি কাফেরও হয়, তদুপরি তাঁর সঙ্গে বিনম্র আচরণ করা, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি ও ভালোবাসা প্রদর্শন করা ইসলামের শাশ্বত নীতি।

লেখক : খতিব, মাসজিদুল কোরআন জামে মসজিদ, কাজলা (ভাঙ্গাপ্রেস), যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর