রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

টানা বর্ষণে জলজট

হেমন্তেই ভরা ভাদরের আবহ

নিম্নচাপের প্রভাবে সারা দেশে টানাবর্ষণ জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। হেমন্তেই  অনুভূত হচ্ছে আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভরা ভাদরের আবহ। তিন দিনের একটানা বর্ষণে জলজটের শিকারে পরিণত হয়েছে রাজধানী ঢাকা। রাজধানীর নিচু এলাকায় কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরপানি। রাজধানীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক তলিয়ে গেছে। চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশালসহ অন্যান্য নগরীতেও জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। চট্টগ্রামের সিংহভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে তিন দিন ধরে। জলাবদ্ধতার কারণে তীব্র যানজটের বিস্তার ঘটেছে রাজধানীতে। যানজট ও জলজটে নাকাল হচ্ছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মানুষও। চট্টগ্রামে বৃষ্টি হলেই নেমে আসে জলাবদ্ধতার অভিশাপ। কর্ণফুলীর জোয়ারে প্লাবিত হয় নগরীর নিম্নাঞ্চল। প্রতিটি সিটি নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচিত হয়ে তাদের কেউ কেউ সমস্যার সমাধানে কিছু কিছু পদক্ষেপও নেন। কিন্তু সমন্বিত পদক্ষেপের অভাবে তা ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারছে না। যা সমস্যার ভয়াবহতা সম্পর্কে ভাবার তাগিদ সৃষ্টি করেছে। চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতার সমাধানে এ পর্যন্ত বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কাঙ্ক্ষিত সুফল দিতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তাব্যক্তিদের দায়িত্বহীনতার কারণে। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতার সঙ্গে রয়েছে জোয়ারের প্রভাব। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগরীর নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাধার মুখে পড়েছে, যা জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। রাজধানীর বেশির ভাগ সড়ক যখন খোঁড়াখুঁড়ির শিকার সেই মুহূর্তে তিন দিনের ঘন বৃষ্টিপাত ঢাকা মহানগরীকে আরও অচল হওয়ার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ভয়াবহ জলজট-যানজটে পাঁচ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করতে এক ঘণ্টা ব্যয় হচ্ছে। দেশের দুই বৃহত্তম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে শুধু সিটি করপোরেশন নয়, সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। সমস্যার সমাধানে নিতে হবে সমন্বিত পদক্ষেপ। দেশের অর্থনীতির স্বার্থেই অর্থনীতির প্রাণভোমরা হিসেবে বিবেচিত দুই প্রধান নগরীকে যানজট জলজটের সমস্যা থেকে মুক্ত রাখতে নিতে হবে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ। খুলনা ও বরিশালসহ অন্যসব মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর