রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভয়াবহ বায়ুদূষণ

অস্তিত্বের স্বার্থেই সচেতন হতে হবে

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিশপ্ত প্রবণতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বায়ুদূষণ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় ওপরের দিকে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। আর বায়ুদূষণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ, তারপর সোমালিয়া। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে দূষণের মাত্রা তুলনামূলক বেশি। অতিরিক্ত হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং ফুসফুসের ক্যান্সারে মানুষজনের মৃত্যু হার বেড়েছে। বাংলাদেশ ও সোমালিয়ার পর রয়েছে চাদ, নাইজেরিয়া, ভারত, নেপাল, দক্ষিণ সুদান, দশম স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। চীনেও দূষণ দিন দিন বাড়ছে। কম দূষণের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট দেশ ব্রুনাই। এর পরে ইউরোপ মহাদেশের সুইডেন; তৃতীয় ফিনল্যান্ড। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশে বায়ু, পানি ও শব্দদূষণ যেন বর্তমানে স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্র্যের ওপর। জলবায়ুর প্রতিকূল প্রভাবও পরিবেশের ওপর পড়ছে। মূলত সার্বিকভাবে গত এক যুগে দূষণ ও পরিবেশের বিচারে বাংলাদেশ পিছিয়েছে। উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী ঢাকা এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূষিত বায়ুর শহরের পরিচিতি অর্জন করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি গবেষণা সংস্থার যৌথ প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণে এশীয় শহরগুলোর শীর্ষে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। তার পরেই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, পাকিস্তানের বৃহত্তম নগরী করাচি ও চীনের বেইজিংয়ের অবস্থান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বে বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভারত ও বাংলাদেশে। এ দূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বায়ুদূষণে শিশুমৃত্যু হারের দিক থেকে পাকিস্তানের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশে বায়ুদূষণে সবচেয়ে ক্ষতিকর ভূমিকা রাখছে ইটভাটা, কল-কারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া। শুষ্ক মৌসুমে এ ধোঁয়া ভয়াবহভাবে বায়ুদূষণের কারণ ঘটায়। জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে বায়ুদূষণ রোধে উদ্যোগ নিতে হবে। দূষণ রোধে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর