রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

অসুস্থ ও বিপদাপন্নদের পাশে দাঁড়াতে হবে

মোহাম্মদ ওমর ফারুক

অসুস্থ ও বিপদাপন্নদের পাশে দাঁড়াতে হবে

আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। এটি আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীর হক। বিশেষত অসুস্থ আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীর খোঁজখবর নেওয়া, সেবা করা অত্যন্ত পুণ্যের কাজ। এক মুসলমানের অসুস্থতা কিংবা বিপদের সময় অন্য মুসলমান এগিয়ে আসবে এটি অসুস্থ বা বিপদাপন্ন ব্যক্তির প্রাপ্য অধিকার বা হক।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিবেশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা, তাদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া এবং তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করা, তাদের হাসি-খুশি ও দুঃখ-কান্নায় অংশগ্রহণ বা সমবেদনা জ্ঞাপন করার শিক্ষা দিয়েছেন। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, জিবরিল আমাকে অসিয়ত বা উপদেশ দিচ্ছিল প্রতিবেশী সম্পর্কে, এমনকি আমি ধারণা করছিলাম প্রতিবেশীকে সম্পদের ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেওয়া হবে। (বোখারি ও মুসলিম)।

আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা— আত্মীয়তার  সম্পর্ক বজায় রাখা, তাদের সঙ্গে মজবুত সম্পর্ক সৃষ্টি, তাদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া, তাদের আর্থিক ও নৈতিক সাহায্য করার ভিত্তি। ইসলামে রক্তের সম্পর্ক বা আত্মীয়তার সম্পর্ক অলঙ্ঘনীয়। আল্লাহতায়ালা আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখাকে তার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করার অনুসঙ্গে পরিণত করেছেন। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা সৃষ্টিজগেক সৃষ্টি করেছেন, যখন তিনি তাদের সৃষ্টি থেকে অবসর হলেন তখন রেহেম বা জরায়ু বলে উঠল, আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় গ্রহণকারীর যথাযথ স্থান হচ্ছে এটা। তিনি বললেন হ্যাঁ। তুমি এতে সন্তুষ্ট হবে না, যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করবে আমি তার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করব, আর যে তোমার সম্পর্ক কেটে দেবে আমি তার সঙ্গে সম্পর্ক কেটে দেব? জরায়ু বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, সেটা তোমার জন্য (হক বা অধিকার স্বরূপ)। বোখারি শরিফের হাদিসে আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যদি তোমরা ইচ্ছা কর পড় আল্লাহর বাণী, ‘যদি তোমরা ক্ষমতা লাভ কর তোমরা কি পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে?’ (সূরা মুহাম্মাদ-২২)।

আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীর অসুস্থতা ও বিপদের সময় তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সহানুভূতি প্রকাশ একে অন্যের সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় করে। পারস্পরিক আস্থা সৃষ্টিতে অবদান রাখে। রসুল (সা.) এর হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা হাশরের দিন বলবেন হে আদম সন্তান! আমি অসুস্থ ছিলাম। কেন আমাকে শুশ্রূষা করনি। বান্দা বলবে হে আমার রব! কীভাবে আমি তোমার সেবা করব। তুমি তো সমগ্র জগতের প্রতিপালক। আল্লাহ বলবেন, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল তুমি তার সেবা করনি। তুমি কি জানতে না তুমি তাকে সেবা করলে তার কাছে আমাকে পেতে।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে আত্মীয়স্বজন প্রতিবেশী এবং দুস্থ মানুষের সেবা করার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর