সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আর কত সড়ক দুর্ঘটনা

অনিয়ম অব্যবস্থার অবসান কাম্য

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই শতাধিক মানুষ হতাহত হচ্ছে। শতাধিক পরিবারের জন্য ডেকে আনছে বিড়ম্বনা। দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারান তাদের পরিবার-পরিজনের বছরের পর বছর ধরে পোহাতে হয় দুর্ভোগ। আহতদের একাংশকে সারা জীবন পঙ্গুত্বের অভিশাপে ভুগতে হয়। দুনিয়ার যেসব দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা বেশি বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট দুর্ঘটনার কারণ সংক্রান্ত পুলিশি প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে বলেছে দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য। আর চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে ঘটে ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা। পরিবেশ-পরিস্থিতিসহ অন্য কারণে দুর্ঘটনার পরিমাণ ১০ শতাংশ। ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনার ৪৩ শতাংশই ঘটছে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে। প্রতিদিনই সড়কে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। স্বজন হারানো মানুষের বুকফাটা আর্তনাদও বেপরোয়া যানবাহন চালকদের মনে সংবেদনশীলতা সৃষ্টি করতে পারছে না। যানবাহন চালকদের অদক্ষতার কারণেই অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাবে, ২০১৫ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ২ হাজার ৩৯৪ জনের। আর যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে এই সংখ্যা আট হাজার। দেশে যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের জন্য বিআরটিএ সারা দেশে ১০২টি চালক প্রশিক্ষণ স্কুলের নিবন্ধন দিলেও এগুলোর কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। লাইসেন্স পেতে যে প্রশিক্ষণের দরকার, তা এসব স্কুল থেকে পাওয়ার কথা হলেও বাস্তবে ড্রাইভিং স্কুলের বেশির ভাগেরই হদিস নেই। ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে প্রশিক্ষণ স্কুলের প্রশিক্ষণ কোনো গুরুত্বই পায় না। উেকাচের বিনিময়েই মেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং এ জন্য দালাল ধরতে হয়। যে কারণে লাইসেন্স প্রত্যাশীরা প্রশিক্ষণের বদলে দালালদের পেছনেই সময় দেন। দেশের মহাসড়কগুলোতে লাখ লাখ নছিমন, করিমন, ইজিবাইকের চলাচল সড়ক দুর্ঘটনায় ইন্ধন জোগাচ্ছে। ফিটনেসহীন যানবাহনের চলাচলও সড়ক ব্যবস্থাপনাকে তছনছ করে দিচ্ছে। ফিটনেস সার্টিফিকেটের  ক্ষেত্রেও চলে লাগামহীন উেকাচ। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে হলে এসব অব্যবস্থার রাশ টেনে ধরার পাশাপাশি পথচারী ও যাত্রীদের সচেতনতাও বাড়াতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর