শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মহান আল্লাহ সবখানেই বিরাজমান

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

মহান আল্লাহ সবখানেই বিরাজমান

মহান আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান। তিনি সবখানে  আছেন। সবকিছু দেখেন, জানেন এবং শোনেন। যা আমরা দেখি, শুনি, জানি, তা তিনি জানেন।  যা দেখি না, শুনি না, জানি না, তাও তিনি জানেন। আসমান-জমিন, গ্রহ-তারা, চন্দ্র-সূর্য, সৃষ্টিজগতের সব বস্তু, এককথায় বিশ্ব ভূমণ্ডলের সব কিছু তাঁর নিয়ন্ত্রণে। তাঁর অধীন। মানুষ যা চায়, তা হয় না। যখন তিনি যা চান, তা-ই হয়। এর কোনো ব্যতিক্রম হয় না। এই ইমান ও বিশ্বাস প্রত্যেক মুসলমানের মধ্যে থাকতে হবে। নইলে ইমানদার হওয়া যাবে না। মুসলমান বলে পরিচয় দেওয়া যাবে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘পূর্ব ও পশ্চিম সব আল্লাহর। তোমরা যেদিকেই মুখ কর, সেদিকেই আল্লাহ আছেন। আল্লাহ বড়ই ব্যাপকতার অধিকারী এবং তিনি সবকিছু জ্ঞাত।’ (সূরা আল বাকারাহ : ১১৫) অপর আয়াতে বর্ণিত হচ্ছে, ‘হে নবী! আমার বান্দা যদি আপনার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তাহলে তাদের বলে দিন, আমি তাদের কাছেই আছি। যে আমাকে ডাকে আমি তার ডাক শুনি এবং জবাব দিই। কাজেই তাদের উচিত আমার আহ্বানে সাড়া দেওয়া এবং আমার ওপর ইমান আনা। এ কথা আপনি তাদের শুনিয়ে দিন, হয়তো সত্য সরল পথের সন্ধান পাবে।’ (সূরা আল বাকারাহ : ১৮৬) এই আয়াত দ্বারা আমরা বুঝতে পারি, বান্দা যখন আল্লাহকে ডাকে, স্মরণ করে, আল্লাহ ডাক শোনেন। জবাব দেন। হয়তো আমরা বুঝি না। পরওয়ারদিগারে আলম সর্বত্র বিরাজমান। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আরও ঘোষিত হচ্ছে, ‘তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি জোরে কথা বলুক বা নিচু স্বরে এবং কেউ রাতের আঁধারে লুকিয়ে থাকুক বা দিনের আলোয় থাকুক, তাঁর (মহান আল্লাহর) জন্য সবই সমান।’ (সূরা আর রা’দ : ১০) অর্থাৎ মহান রাব্বুল আলামিন সবকিছু জানেন এবং দেখেন। ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র এবং বড় থেকে বড় সব কিছু তিনি জানেন, দেখেন, শোনেন। তাঁর জ্ঞানের বাইরে কোনো কিছুই নেই। কেউ তাকে ফাঁকি দিতে পারে না এবং পারবে না। এমনকি মনের গভীরে মানুষ যা ভাবে, চিন্তা করে, কেউ না জানলেও তা আল্লাহ জানেন। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের অপর আয়াতে ঘোষিত হচ্ছে, ‘আল্লাহ (মানুষের) চোখের বিশ্বাসঘাতকতা (অবৈধ দৃষ্টি) এবং মনের গোপন কথা জানেন।’ (সূরা মমিনুন : ১৯) হাদিসের কিতাবগুলোতেও ইমানের এই গুরুত্বপূর্ণ দিকটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন— আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং বলতে থাকেন, কে আছ আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আছ আমার কাছে চাইবে? আমি তাকে দেব। কে আছ আমার কাছে পাপ থেকে ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব। (বুখারি) পাঠক! মহান আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে বেশি বেশি ক্ষমা চাওয়ার তাওফিক দান করেন। ক্ষমা নসিব করেন।  রহমতের চাদর দিয়ে আমাদের সবাইকে ঢেকে নেন। আমিন!

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

 

সর্বশেষ খবর