শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

এটি আসলেই যুদ্ধাপরাধ

মিয়ানমারের জবাবদিহিতা কাম্য

জাপান, জার্মানি ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে বলেছেন, মানুষের এমন দুর্দশা তারা কখনো দেখেননি। একই সময়ে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য মিয়ানমারের অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করলেও রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাননি। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলার পর আবেগাপ্লুত মার্কিন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানরা বলেছেন রাখাইনে যা ঘটেছে তা যুদ্ধাপরাধ। তারা রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস আচরণকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চারটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মার্কিন সিনেট ও কংগ্রেসম্যানদের বাংলাদেশ সফর নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের মানবাধিকার ফোরামে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগসংবলিত একটি প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর পরই চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করলেন। জাতিংঘে ভোটাভুটিতে জাপান ভোটদানে বিরত থাকলেও রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা বলেছেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘে মিয়ানমারের পক্ষাবলম্বন করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আনা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিলেও বাংলাদেশ সফরে এসে চীনা মন্ত্রী সমস্যার সমাধানে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাব বাংলাদেশের বিবেচনায় রয়েছে এবং বাংলাদেশ ইতিমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে সরাসরি আলাপ-আলোচনাও চালাচ্ছে। তবে চীনা মন্ত্রীর উচিত ছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করা। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর কতটা বর্বর আচরণ করা হয়েছে, ক্যাম্প পরিদর্শন করলেই তা সবিস্তারে জানা সম্ভব হতো। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মার্কিন সিনেট ও কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল এবং চারটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর সমস্যার গ্রন্থিমোচনে অবদান রাখবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যার কার্যত কোনো পক্ষ নয়। রাখাইনে মিয়ানমার বাহিনীর পৈশাচিক নির্যাতনের মুখে যারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ তাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্বসমাজকে নৈতিক কারণেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। মুখে মুখে সহানুভূতি নয়, বিপন্ন মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে রোহিঙ্গাদের সসম্মানে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমারকে রাজি করাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর