মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল

চট্টগ্রাম নগরীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে

জলবায়ু পরিবর্তনে আবহাওয়ায় উষ্ণতা থাবা বিস্তার করছে। গলছে হিমবাহ ও মেরুদেশের বরফের স্তর। বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। এর ফলে সমুদ্রতীরবর্তী অনেক দেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও জলবায়ু পরিবর্তনের অশুভ প্রবণতার অন্যতম শিকার। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকায় আগামী ১০০ বছরের মধ্যে ছোট-বড় সব মিলিয়ে বিশ্বের ২৯৩টি শহর পুরোপুরি পানির নিচে ডুবে যাবে। তালিকায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামের নামও রয়েছে। নিউইয়র্ক, লন্ডন, টোকিও, কলম্বো, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, হংকং, সাংহাইসহ আরও বেশ কয়েকটি মেগাসিটির নামও রয়েছে অনিবার্য ধ্বংসের তালিকায়। নাসার অন্যতম বিজ্ঞানী সুরেন্দ্র অধিকারী বলেছেন, বিশ্বের আরও ২৯২টি শহরের সঙ্গে চট্টগ্রামও হারিয়ে যাবে জলের অতলে, ১০০ বছর পর। সমুদ্রের পানির স্তর যেভাবে বাড়ছে, তাতে চট্টগ্রামকে বাঁচানো হয়তো সম্ভব হবে না। নাসার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি ১০ বছর অন্তর ১ দশমিক ৪ সেন্টিমিটার পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম নগরী। এই হারে পানি বাড়তে থাকলে আগামী ১০০ বছরের মধ্যেই চট্টগ্রাম ১৪ দশমিক ১ সেন্টিমিটার পানির নিচে চলে যাবে। সে সময় আর এই মহানগরীর কোথাও শুকনো মাটির অস্তিত্বই থাকবে না। নাসার প্রতিবেদন অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে জাপানের রাজধানী টোকিও। ভারতীয় উপমহাদেশ ও সংলগ্ন এলাকাগুলোকে সবচেয়ে বিপদাপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে নাসার প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের পানি আর ১ মিটার বৃদ্ধি পেলেই উপমহাদেশের অন্তত ১৪ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা তলিয়ে যাবে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি বা জলবায়ু পরিবর্তন মানব জাতিকে এক ভয়ঙ্কর হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশ্বের যেসব দেশ এই হুমকির সম্মুখীন তার সামনের সারিতে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এর কুফল ইতিমধ্যে অনুভূত হচ্ছে। সমুদ্রের লোনা পানির আগ্রাসনে সাতক্ষীরার হাজার হাজার মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতার পেছনেও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। অস্তিত্বের স্বার্থেই এ বিপদ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। নিতে হবে নিজেদের সুরক্ষার প্রস্তুতি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর