বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ছিনতাইকারীরা অপ্রতিরোধ্য

জননিরাপত্তার দিকে নজর দিন

ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে শাহ আলম গাজী ও আকলিমা দম্পতি অর্থ ও মোবাইল ফোনই শুধু নয়, হারিয়েছেন তাদের ছয় মাসের শিশু সন্তানকেও। আড়াই বছর বয়সের বড় ছেলে আল আমিনের চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় এসে গত সোমবার সকালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে রিকশাযোগে শনিরআখড়ায় যাওয়ার সময় তারা দয়াগঞ্জে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীরা ছে্া মেরে আকলিমার ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় রাস্তায় পড়ে যান আকলিমা ও তাদের শিশু সন্তান আরাফাত। ঘটনাস্থলেই মারা যায় তাদের আদরের দুলাল। এই দম্পতির বড় সন্তান আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে বাতজ্বরে ভুগছে। তার চিকিৎসার জন্য অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে ঢাকায় আসেন শাহ আলম ও আকলিমা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে অঝরে কাঁদছিলেন তারা। বলছিলেন এক সন্তানকে বাঁচানোর জন্য চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসে আরেক সন্তানকে হারাতে হবে এই নিয়তির কথা তাদের জানা ছিল না। রাজধানীতে ছিনতাইকারীরা কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দয়াগঞ্জের ছিনতাই তারই প্রমাণ। রাজধানীতে এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে ছিনতাই হয় না। মানুষ চেহারার হায়েনারা ওত পেতে থাকে প্রতিটি সড়কে। বিশেষত ভোরের দিকে ও রাতে তারা অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। রাজধানীর যেসব এলাকা ছিনতাইকারীদের মৃগয়াক্ষেত্র বলে পরিচিত দয়াগঞ্জ তার অন্যতম। প্রতিদিন রাজধানীতে ছিনতাইয়ের শতাধিক ঘটনা ঘটলেও পুলিশের খাতায় এই অপরাধটির বিষয়ে ক্ষেত্রবিশেষ লিপিবদ্ধ হয়। সাধারণত ছিনতাইকারীদের দ্বারা কেউ হতাহত না হলে কিংবা অতিগুরুত্বপূর্ণ কোনো জিনিসপত্র ছিনতাই না হলে কেউ থানায় অভিযোগ জানাতে যায় না হয়রানির ভয়ে। ফলে সরকারের অজ্ঞাতেই থেকে যায় রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা বিশেষত ছিনতাই বৃদ্ধির ঘটনা। রাজধানীর সড়কগুলো অনেকটাই নিরাপদ হয়ে উঠেছিল র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর নিয়মিত প্রহরার কারণে। সে ক্ষেত্রে শিথিলতা আসায় নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে। ছিনতাইয়ের সময় মায়ের কোল থেকে পড়ে

গিয়ে এক শিশুর মৃত্যু ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল করে তুলবে— আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর