মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

নিঃস্ব এক সাবেক সংসদ সদস্য

প্রধানমন্ত্রীর মানবিকতা সুবাস ছড়াবে

এক সাংবাদিক নেতার ফেসবুক স্ট্যাটাস শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষিত হলো এবং এরই বদৌলতে চিকিৎসার সুযোগ পেলেন মুক্তিযুদ্ধের  বীরযোদ্ধা, শ্রমিক আন্দোলনের নিবেদিতপ্রাণ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ। আন্দোলন-সংগ্রামের একসময়ের তুখোড় নেতা মোহাম্মদ ইউসুফ ১৯৯১ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাকা চৌধুরীকে পরাজিত করে চমক সৃষ্টি করেছিলেন। গণমানুষের এই নেতা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরও নিজের বা আত্মীয়স্বজনের ভাগ্য গড়ার চিন্তা করেননি। ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন চিরকুমার। সারা জীবন দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। থেকেছেন ছোট ভাইয়ের সংসারে। ছোট ভাইয়ের আয়ের উৎস ছোট্ট একটি চায়ের দোকান। তিনি বড় ভাইকে তার সামর্থ্য অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। ১৭ বছর ধরে ছোট ভাই সেকান্দরের সঙ্গেই আছেন সাবেক এই সংসদ সদস্য। কিন্তু হঠাৎ করে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তার পায়ে পচন ধরে। ব্যয়বহুল চিকিৎসা ব্যয় ছোট ভাইয়ের পক্ষে নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে গেলেও তার করার কিছু ছিল না। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মাসিক ভাতাটাই ছিল সাবেক সংসদ সদস্যের একমাত্র আয়। কিন্তু তা দিয়ে চিকিৎসার খরচ চলে না। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস ৫ জানুয়ারি তার ফেসবুক ওয়ালে এ বিষয়ে মর্মস্পর্শী স্ট্যাটাস দিলে তা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষিত হয়। গত রবিবার এই ত্যাগী নেতাকে নেওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তার চিকিৎসা ব্যয় সরকারিভাবে বহনের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতা শুধু দেশ নয়, বিশ্বজুড়ে নন্দিত। পশ্চিমা দুনিয়ার অভিজাত পত্রিকার ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ অভিধা তারই প্রমাণ। আমাদের প্রশ্ন— মোহাম্মদ ইউসুফের পাশে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে দাঁড়াতে হলো কেন? সংশ্লিষ্ট এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের কি এ ব্যাপারে কোনো দায় ছিল না? দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি দায়বোধের যে অভাব তাদের মধ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এটি কোনো ভালো লক্ষণ নয়। প্রধানমন্ত্রীকে তার মানবিকতাবোধের জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই। তিনি হয়তো সারা জীবন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন না। তবে মানবিকতার সুবাস অনন্তকাল ধরে সুরভি ছড়াবে।

সর্বশেষ খবর