শনিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

নারী-শিশু পাচার

পাচারকারীদের দমনে ব্যবস্থা নিন

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে নারী পাচারের ঘটনা অহরহ ঘটছে। পাচারকারীরা প্রতি বছর ৫০ হাজার নারীকে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে বিদেশে। এদের এক বড় অংশকে ভারতে পতিতালয়সহ মনোরঞ্জনমূলক বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হতে বাধ্য করা হচ্ছে। একাংশকে নিযুক্ত করা হচ্ছে গৃহপরিচারিকাসহ অন্যান্য কাজে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের এক জরিপচিত্রে এ ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। এতে বলা হয়, গত এক দশকে পাঁচ লাখ নারী ও শিশু ভারতে পাচার হয়েছে। যাদের বয়স ১২ থেকে ৩০। ভারতের বিভিন্ন শহর ও রাজ্যে মানব পাচারকারী সিন্ডিকেটগুলো বাংলাদেশের পাচারকারী সিন্ডিকেটের কাছে তাদের চাহিদার কথা জানায়। এরপর চাহিদা অনুযায়ী নারী-তরুণী-শিশু সরবরাহ করা হয়। ভারতীয় সিন্ডিকেটের চাহিদা থাকে মূলত অল্প বয়সী তরুণী ও নারী; যাদের পতিতালয়, ড্যান্সবার, ম্যাসাজ পার্লার, পরিচারিকা কিংবা অন্যান্য কাজে লাগানো যায়। বিএসএফের মতে, ঢাকা থেকে শুরু করে পুরো বাংলাদেশেই রয়েছে দালালদের একটা শক্ত নেটওয়ার্ক। নিজেদের কাজের সুবিধার্থে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর মানুষের সঙ্গে দালালদের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। বিএসএফের জরিপে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি পাচারকারী সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে সীমান্তে বসবাসকারী মানুষকে ভালো চাকরি, ঘরের কাজ, বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, চলচ্চিত্রে কাজের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে ভারতে তাদের জীবনকে আরও উন্নত করার প্রলোভন দেওয়া হয়। সিন্ডিকেটের প্রথম লক্ষ্যই থাকে প্রধানত বাংলাদেশের গরিব ও অসহায় পরিবারের তরুণীরা। বাংলাদেশ থেকে ভারতে নারী-শিশু পাচার নিঃসন্দেহে একটি উদ্বেগজনক খবর। পাচারের প্রায় সব ঘটনা ঘটে বিয়ে, ভালো চাকরিসহ নানা প্রতারণার ফাঁদ সাজিয়ে। সুসংঘবদ্ধ পাচারকারীরা বছরের পর বছর এ অপরাধ সংঘটিত করে চললেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় মনোভাবের কারণে।  নারী-শিশু পাচার বন্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে যেমন কঠোর হতে হবে, তেমনি এর বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে জনসচেতনতা। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকারের দায়বদ্ধ ভূমিকাও গুরুত্বের দাবিদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর