বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাকিস্তানের দিল্লি দখল এবং...

মাকিদ হায়দার

পাকিস্তানের দিল্লি দখল এবং...

অনেকেই বলে থাকেন গুজবের হাত, পা, কান বলে কিছুই নেই। তবুও আকাশে-বাতাসে ভেসে বেড়ায় ডানাবিহীন গুজব। ভেসে ভেসে মানুষের কানে কানে পৌঁছে দেয় উদ্ভট কিছু কথা। ১৯৬৫ সালে আমরা শুনেছিলাম, পাকিস্তান-ভারতের যুদ্ধে, পাকিস্তান ভারতের হাজার হাজার সৈনিককে খেমকারাম সেক্টরে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, ভারতের ১৫-২০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। পাকিস্তানের সৈনিকরা যে কোনো সময় দিল্লি দখল করে চা-পান শেষে দিল্লির জামে মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ আদায় করবে। তারপর সমগ্র ভারতকে পাকিস্তান বানানো হবে। পরে শুনেছি সেটি ছিল গুজব, পূর্ব পাকিস্তানিদের মনোবল বাড়ানোর কৌশল, অথচ সেই যুদ্ধে হেরে গিয়েছিল পাকিস্তান। ১৯৬৯ সালের গোড়াতেই আমরা শুনেছিলাম, পাকিস্তান থেকে আইয়ুব খান অথবা ইয়াহিয়া খান কিংবা জেনারেল হামিদ গুল যে কোনো দিন ঢাকায় এসে কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবকে জেলের বাইরে এনে, কুর্মিটোলার আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে হত্যা করবে, শেখ মুজিবের ছয় দফা দাবির কারণে। গুজব ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খাঁর কাছে রাওয়ালপিন্ডি থেকে আইয়ুব খানের কোনো টেলিফোন দিনে বা রাতে এলেই গভর্নর মোনেম খাঁ মৃগী রোগীর মতো শুধু কাঁপতে কাঁপতে নাকি বলতেন, জি আব্বা হুজুর, জি আব্বা এবং যতক্ষণ প্রেসিডেন্ট সাহেবের কথা শেষ না হতো ততক্ষণ পর্যন্ত গভর্নর সাহেব চেয়ারে না বসে দাঁড়িয়ে কথা বলতেন। প্রেসিডেন্টকে সম্মান দেখাতেন দাঁড়িয়ে। আগে, পিছে ৪ থেকে ৬ বার, স্যার স্যার তাকে বলতেই হতো, কথা শেষে গভর্নর সাহেব চিনি অথবা লেবুর শরবত খেতেন, তারপর ১০ মিনিট থাকতেন আল্লাহর দরবারে হাত তুলে, যেন তিনি আজীবন গভর্নর থাকতে পারেন পূর্ব পাকিস্তানের। ষাট দশকের মাঝামাঝি সময়ে গভর্নর মোনেমকে নিয়ে হাজার রকমের গুজবের ভিতরে আরও ছিল, তিনি কবি জসীমউদ্দীনকে নাকি বলেছিলেন, রবীন্দ্র সংগীত রচনা করতে। কিশোরকালে গল্প শুনেছিলাম এক রাজার নাকি একটি মেয়ে হয়েছিল, ধাইমা প্রসূতির ঘর থেকে বের হলে রাজবাড়ীর দাসীরা ধাইমার কাছে জানতে চাইলেন, রানীমার ছেলে হয়েছে, নাকি মেয়ে হয়েছে? দেখতে কেমন হয়েছে? ধাইমা সত্যি কথাই বললেন, রানীমার একটি শ্যামলা মেয়ে হয়েছে, ধাইমার শ্যামলা শব্দটাকে কালো, কুচকুচে ভেবে রাজবাড়ীর দাসীরা সবাই জানিয়ে দিল রানীমার কালো কুচকুচে মেয়ে হয়েছে, কথাটি ছড়াতে ছড়াতে শেষে গিয়ে হয়েছিল রানীমার হাজার হাজার কালো কাকের মতো মেয়ে হয়েছে।

গুজবের হাত-পা থাকুক বা নাই থাকুক তাই তাকে বাতাসের ভেসে বেড়াতে হয়, ভাসতে ভাসতেই পৌঁছে যায় হাজার মানুষের কানে। অপর দিকে গুজবের চেয়ে বেশি দিন বেঁচে থাকে দেয়াল লিখন, যেহেতু গুজব ক্ষণস্থায়ী। দেয়াল লিখন দীর্ঘস্থায়ী। ক্ষণস্থায়ী নয় জেনেই ষাট দশক থেকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন দেয়ালে দেখেছি, দেয়াল লিখনোর অমর বাণী। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের আগে শহরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দেয়ালে দেয়ালে বিশাল বিশাল হরফে লেখা হয়েছিল— শেখ মুজিবের মুক্তি চাই। কোথাও কোথাও লেখা হয়েছিল, চীনের মহান নেতা মাও সেতুংয়ের মহান বাণী। (ক) শ্রেণিশত্রু খতম কর (খ) বন্দুকের নল সকল ক্ষমতার উৎস। সেই লিখনের নিচে লেখা থাকত কমরেড সিরাজ শিকদার। দেয়াল লিখন এখনো আমাকে আকৃষ্ট করে।

গত শতকের আশির দশকে মোহাম্মদপুরের আসাদ গেট পার হতেই হাতের বামের দিকের একটি বাড়ির দেয়ালে দেখলাম চমৎকার একটি দেয়াল লিখন, সেই লিখন যিনি লিখেছিলেন, তিনি যে একজন বিশাল কবি, সে বিষয়ে আমি কোটি ভাগ নিশ্চিত।

দেয়াল লিখনের কবি লিখেছিলেন—

‘এরশাদের চরিত্র

ফুলের মতো পবিত্র।’

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তখন ছিলেন দেশের রাষ্ট্রপতি এবং গণমানুষের আলোচনার মধ্যমণি। উপরন্তু এদেশের একনায়ক জেনারেল, কবি, প্রেমিক, প্রেমের উদার চিত্ত, দুর্মুখ, দুর্বৃত্তরা বলেছিল দেয়ালের ওই অমৃত বাণী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদেরই রচিত। তিনি কাউকে দিয়ে লিখিয়েছেন যেহেতু তিনি কবি, যেহেতু তার কবিতা ছাপা হতো, কবি শামসুর রাহমানের মনোনীত সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রায়’।

গত এবং এই শতকের শুরু থেকেই অনেক বাড়ির দেয়ালে দেখেছি ইংরেজি এবং বাংলায় দেয়াল লিখন। রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক বাণী সংবলিত, তবে আমার অভিধায়, শ্রেষ্ঠ দেয়াল লিখন হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল একটি দেয়াল লিখন। যিনি লিখেছিলেন তিনি বোধ করি একজন ব্যর্থ প্রেমিক। প্রেমের অদৃশ্য দহনে পুড়তে পুড়তেই হয়তো তার হৃদয়ের সেই অমৃত বাণী ঠাঁই পেয়েছিল দেয়ালের বুকে-পিঠে।

মগবাজার থেকে তেজগাঁওয়ের সাতমাথায় আসতে আসতে হাতের ডানদিকের একটি দেয়ালে লেখা দেখলাম, যা দেখে ভীষণ আকৃষ্ট হলাম। ব্যর্থ প্রেমিকের আর্তি। নির্বোধ পাঠ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ তার ছিন্নপত্র : পত্র ১৫০ এ জানিয়েছেন— ‘অনেক বোধশক্তিবিহীন পাঠক আছে, যারা নতুনকে কেবল মাত্র তার নতুনত্বের জন্য পছন্দ করে’ আমি সেই বোধশক্তিহীন পাঠকদের একজন দেয়াল লিখনটি, আমি একাই পড়িনি পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। ‘কষ্টে আছে আইজুদ্দীন’।

ফেরা যাক গুজবের কাছে। গত শতকের নব্বই দশকের শুরুতে রাষ্ট্র ক্ষমতার অধিকারী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তাদের দলবল নিয়ে যখন রাস্তায় নেমেছিলেন তখন গুজব ছড়িয়েছিল-রাষ্ট্রপতি রাতের আঁধারে পালিয়ে যাবেন পশ্চিমা দেশে। তবে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রক্ষমতা দিয়ে যাবেন সেনাবাহিনীর হাতে।

১৯৭৫ সালে জাতির জনকের সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পরে অনেক রকম গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। (ক) শেখ কামাল বেঁচে আছেন, তবে পালিয়ে আছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়, শেখ কামালকে ধরিয়ে দিতে পারলে তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে। (খ) ’৭৫ সালের মর্মান্তিক সেই হত্যাকাণ্ডের পর আরও কিছু গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ভারতে পালিয়ে গিয়ে সেখান থেকে দিল্লি যাবেন এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আলোচনা শেষে শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেবেন, ভারতীয় সৈনিকদের সহায়তায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবেন। আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে নব্বই দশক এমনকি এই দশকের গোড়ার দিক থেকেই ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাড়ির দেয়ালে কে-বা কারা লিখেছিলেন— শেখ মুজিব হত্যার বিচার চাই।

দেয়াল লিখনটি দেখার পরে হঠাৎ করে অতীতে ফিরে গেলাম। সেটি ১৯৬৫ সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ের কথা। আমি কলেজে পড়লেও মালিবাগ থেকে সাইকেল চালিয়ে চলে যেতাম ইকবাল হলে আড্ডা দিতে। [বর্তমান ‘সার্জেন্ট জহুরুল হক হল’] হঠাৎ একদিন শেখ শহিদুল ইসলাম ভাই ইকবাল হল থেকে আমাকে সঙ্গে নিয়ে ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে তার মামা বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে নিয়ে গেলেন, এমনকি রিকশা ভাড়া ‘আট আনা’ দিয়ে আমাকে জানালেন মামার সঙ্গে তোমাকে পরিচয় করিয়ে দেব। উনার সঙ্গে আমার কিছু কথা আছে। যথারীতি বাইরের ঘরের লম্বা বেঞ্চের ওপরে বসতে না বসতেই শেখ মুজিব নেমে এলেন দোতলা থেকে। দেখলাম লম্বা, সুদর্শন, স্বাস্থ্যবান, লুঙ্গি পরনে হাতে পাইপ। একবার তাকালেন শেখ শহিদের দিকে পরে আমার দিকে। শহিদ ভাইকে জিজ্ঞাসা করলেন ছেলেটি কে? শহিদ ভাই জানালেন জগন্নাথ কলেজে, ছাত্রলীগের তরুণ... কথাটি সম্পন্ন করতে পারলেন না শেখ শহিদ। তখনই তার মামা আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, রাজীউদ্দিন রাজুকে চিনিস নাকি? বললাম হ্যাঁ, রাজু ভাই তো আমাদের নেতা। আমাদের জগন্নাথ কলেজের ছাত্রসংসদের সভাপতি। শেখ সাহেব বোধকরি আমার কথা শুনে আশ্বস্ত হলেন। সৌভাগ্যক্রমে শহিদ ভাইয়ের মামি অর্থাৎ বেগম মুজিব এসে উপস্থিত এবং কাকে যেন বললেন, কবুতরের খাবার পানি ঠিকমতো দিস। বঙ্গবন্ধু তার বেগম সাহেবাকে বললেন, টুঙ্গিপাড়া থেকে গতকাল যে খেজুরের গুড়, পাটালি আর মুড়ি এসেছে ওদের দুজনকে খেতে দাও রেনু। সেই আমি প্রথম বেগম মুজিবের নাম শুনলাম। যথারীতি গুড়, মুড়ি আসার আগে শেখ সাহেব বললেন বাড়ি কোথায়? বললাম পাবনায়। তিনি শেষ শব্দটি বলেছিলেন পড়ালেখা ভালো করে করবি। সেই কথাটি এখনো আমাকে দোলাইত করে। বাঙালি বিস্মৃতি প্রবণ জাতি। তাই স্মৃতি খুবই নির্মম। দীর্ঘ ৫৩ বছর এই ঢাকা শহরে বাস করে অনেক দেয়াল লিখন দেখলাম এবং পড়লাম, গুজব শুনলাম সহস্রাধিক। দেয়াল লিখন এবং গুজবের মাঝে পার্থক্যটি হলো দেয়াল লিখন মানুষের দৃষ্টিতে দীর্ঘদিন দৃশ্যমান, গুজব ভাসমান। ভেসে বেড়ায় আকাশে বাতাসে। মানুষের ২ কান থেকে ৪ কান, ৪ কান থেকে ৮ কান, ৮ কান থেকে ১৬ কোটি কানের কাছে পৌঁছে যায় গুজবের হাত-পা না থেকেও। ১৯৭৫ সালে জাতির জনকের সপরিবারে নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরেও অনেক সেনাসদস্য এবং পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে বলা হয়েছিল, শেখ কামাল বেঁচে আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, শেখ কামাল কোনোমতে বর্ডার পাড়ি দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং তার সাংসদদের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে পিতা-মাতা এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যার প্রতিশোধ নেবেন। গুজবে গুজবে সারা দেশ যেন ডুবে গিয়েছিল। যদি কামাল ভারতে যেতে পারেন তবে ইন্দিরা গান্ধী কামালের আবেদনে সাড়া দেবেন। কেউ কেউ বলেছিল তারা কামালকে দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধীর বাসভবনের সামনে স্বচক্ষে দেখে এসেছেন। আবার অনেকে বলেছিলেন কামাল বাংলাদেশের ভিতরে লুকিয়ে আছেন। সুযোগ পেলেই ভারতে চলে যাবেন। দুঃখের বিষয় শেখ কামাল সম্পর্কে ১৯৭৪-৭৫ সাল থেকে মিথ্যা প্রচারণা শুরু হয়েছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগ বিরোধীরা গুজব ছড়িয়ে দিয়েছিল সঙ্গে অনেক আজে বাজে মিথ্যা কথা। অনেক লোকই বিশ্বাস করেছিল। যা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা গুজব ছিল। শেখ কামাল ছিলেন শিল্পসাহিত্যে এবং খেলাধুলার মানুষ। তার অনুরাগ ছিল গানবাজনার প্রতি। তিনি বোধহয় সলিমুল্লাহ হলের অনাবাসিক ছাত্র ছিলেন। আমার স্মৃতি যদি আমাকে বিভ্রান্ত না করে ১৯৭৩-৭৪ সালে ডাকসুর বার্ষিক নাটকে শেখ কামাল অভিনয় করেছিলেন। নাটকটির নাট্যকার ছিল আল মনসুর (দুলাল)। নাটকটির নাম ছিল ‘নিহত এল.এম.জি’। ডাকসুর আন্তঃহল নাট্য প্রতিযোগিতায় অভিনয় করেছিলেন রেখা আহমেদ, খায়রুল আলম সবুজ। ম. হামিদ ছিলেন নাট্যচক্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর অন্যতম নেতা। শেখ কামালের কণ্ঠে গান শুনেছিলাম। তিনি বাচ্চাদের সঙ্গে গেয়েছিলেন সত্তর দশকের একটি জনপ্রিয় গান— ‘চালে ডালে মিশাইলি রে’ এবং বিজন ভট্টাচার্যের ‘নবান্ন’ নাটকে তাকে দেখেছিলাম সম্ভাবত তিনি অভিনয় করেছিলেন এবং ছাত্র ছিলেন সোসিওলজি বিভাগে। সেই কামালকে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টে হত্যার শিকার হতে হয়েছিল কতিপয় বিভ্রান্ত সৈনিকের হাতে। অথচ গুজব ছড়ানো হয়েছিল শেখ কামাল বেঁচে আছেন, বিভিন্ন জেলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। গুজব এবং অতীত নিয়ে আজকের এই স্মৃতিচারণ গত শতকে নব্বই দশকের শুরুতে রাষ্ট্রক্ষমতার অধিকারী এরশাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুই দল যখন রাস্তায় নেমেছিলেন তখন গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল রাতের আঁধারে পালিয়ে যাবেন পশ্চিম দেশে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তবে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দিয়ে যাবেন সেনাবাহিনীর হাতে। ১৯৭৫ সালে জাতির জনকের সপরিবার হত্যাকাণ্ডের পরে অনেক রকম গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। শেখ সাহেবের বাড়িতে লাখ লাখ ডলার-পাউন্ড, হাজার হাজার ভারতীয় রুপি, মেশিনগান, থ্রি নট থ্রি পাওয়া গেছে। আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে নব্বই দশক এবং এই দশকের গোড়ার দিক থেকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাড়ির দেয়ালে দেখেছিলাম হাজার বারতা, শুনেছিলাম অনেক গুজব।

লেখক :  কবি।

সর্বশেষ খবর