শনিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

উন্নয়নশীল দেশের হাতছানি

একে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে

একাদশ সাধারণ নির্বাচনের আগেই বাংলাদেশের কাঁধ থেকে স্বল্পোন্নত দেশের লজ্জা সরে যাচ্ছে। মর্যাদার অধিকারী উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার মাস মার্চেই জাতিসংঘের কাছ থেকে মিলবে এই স্বীকৃতি। আশা করা হচ্ছে, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ৯৮তম জন্মবার্ষিকীতে এ ঘোষণা আসবে এবং তা হবে বাঙালি জাতির জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্থার তথ্যমতে, একটি দেশ এলডিসি থেকে বের হতে যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, তা আগেই সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ। এই তিন শর্ত হলো— মানুষের মাথাপিছু বার্ষিক আয় তিন বছরের গড় হিসেবে ১ হাজার ২৪২ মার্কিন ডলারে উন্নীত হওয়া। বাংলাদেশে এখন মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬১০ ডলার। আর মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে ১০০-এর মধ্যে ৬৬ বা এর বেশি অর্জন করতে হয়, বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৭০-এ। অন্যদিকে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে ৩২ বা তার নিচে থাকার শর্ত রয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থান ২৫.০৩-এ। বর্তমানে ৪৭টি দেশ স্বল্পোন্নত তালিকায় রয়েছে। যেগুলোকে এলডিসি বলা হয়। স্বাধীনতার পরপরই এর সদস্য হয় বাংলাদেশ। এই গ্রুপের সদস্য থাকলে আন্তর্জাতিক মহল থেকে কিছু সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। অসুবিধাও আছে। তা হলো, ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে এসব দেশের রেটিংয়ে সমস্যা হয়। ২০২১ সালে মধ্য আয়ের ও ২০৪১ সালে উন্নত দেশের কাতারে যেতে চায় বাংলাদেশ। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার পরও আরও ছয় বছর এলডিসির সুযোগ-সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়া জাতির জন্য এক বিরাট অর্জন হলেও একই সঙ্গে এটি হবে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলো থেকে যে সুবিধা অর্জন করত, তার অবসান হবে। বাংলাদেশকে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়ে নিজেদের পণ্য পশ্চিমা বিশ্বে রপ্তানি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে আর্থিক সুবিধার অবসান হবে তা পুষিয়ে নিতে তৎপর হতে হবে জোরেশোরে। অসহায় দেশ বা জাতিকে উন্নত দেশগুলো দয়া করলেও প্রকৃত অর্থে নিজেদের সহযোগী ভাবে না। ব্যবসা-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোর সহযোগী হওয়ার সক্ষমতা প্রদর্শন করে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে কীভাবে জাতি লাভবান হতে পারবে, সে প্রয়াস চালাতে হবে।

সর্বশেষ খবর