শিরোনাম
শুক্রবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বগুড়ার কৃষিযন্ত্র শিল্প

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত হোক

বাংলাদেশকে বলা হয় কৃষিপ্রধান দেশ। এখনো দেশের এক বৃহৎ জনগোষ্ঠী কৃষির ওপর নির্ভরশীল। ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে কৃষিযন্ত্রের চাহিদাও ব্যাপক। এই চাহিদার ওপর ভরসা করে বগুড়ায় শুরু হয়েছিল কৃষিযন্ত্র তৈরির উদ্যোগ। হাঁটি হাঁটি পা পা করে সে শিল্প এখন মহীরুহ আকার ধারণ করেছে। দেশের চাহিদার সিংহভাগেরই জোগান দিচ্ছে বগুড়ায় তৈরি কৃষিশিল্প। কৃষিযন্ত্র ও যন্ত্রাংশের পাশাপাশি ছোট-বড় ইন্ডাস্ট্রি ও কলকারখানায় ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রাংশও তৈরি হচ্ছে করতোয়া নদীতীরের প্রাচীন জনপদ বগুড়ায়। এর মধ্যে রয়েছে শ্যালো ইঞ্জিনের সেচ পাম্প, লায়নার, পিস্টন, টিউবওয়েল, পাওয়ার টিলারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, লেদ মেশিন, গাড়ির ব্রেক ড্রাম, করাতকল, ফ্লাওয়ার মিল, টেক্সটাইল মিল, অয়েল মিল, এমনকি ধানকাটা মেশিনসহ অন্যান্য মেশিনের যন্ত্রাংশ। বগুড়ায় তৈরি এসব যন্ত্রাংশের ওপর দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষের নির্ভরতাও বাড়ছে। স্বাধীনতার আগে বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী বিসিক শিল্প ও কাটনার পাড়াসহ বেশকিছু এলাকায় যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে এ কারখানাগুলোয় তৈরি কৃষিপণ্য বগুড়াসহ উত্তরের ১৬ জেলায় ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি করে। পরে সারা দেশে বাজার সৃষ্টিতে সক্ষম হয়। বর্ধিত চাহিদা পূরণে বগুড়ার ফুলবাড়ী, গোহাইল রোড, রেলওয়ে মার্কেট, শাপলা মার্কেট, কাটনার পাড়া, চারমাথা এলাকায় গড়ে ওঠে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। এসব কারখানায় তৈরি বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হয় বাসাবাড়ি, ইন্ডাস্ট্রি ও কৃষিকাজে। দেশের কৃষিযন্ত্রাংশের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশের জোগানদাতা বগুড়ার ফাউন্ড্রি শিল্প। বগুড়ায় কৃষিযন্ত্রসহ নিত্য কাজে ব্যবহৃত যেসব যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে তা গুণে-মানে বিদেশি পণ্যের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। এ শিল্প হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। শিল্প ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার যে সামর্থ্য আছে সে সত্যটি তুলে ধরেছে। ক্ষুদ্র শিল্পের উদ্যোক্তা ও কারিগরদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ না থাকলেও তারা ওস্তাদদের কাছ থেকে দেখে দেখে কাজ শিখে নিজেদের যেভাবে সত্যিকার অর্থে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ বানিয়েছে তা বিস্ময়কর। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে শুধু দেশের চাহিদা নয়, রপ্তানিযোগ্য যন্ত্রাংশও বগুড়াভিত্তিক কারিগরদের সহায়তায় তৈরি এবং তা রপ্তানির মাধ্যমে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব হবে।

 

সর্বশেষ খবর