রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

শয়তান থেকে দূরে থাকতে হবে

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

মানুষ সৃষ্টির সেরা। সেই মানুষই নিজেকে সৃষ্টির সেরা হিসেবে দাবি করতে পারে যে ইমানদার। যে আল্লাহর সন্তুষ্টিবিধানে সক্ষম হয়েছে। নিজেকে সৎকর্মশীল হিসেবে প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছে। যারা ইমানদার তাদের অশুভ ও অকল্যাণকর শক্তির প্রতিভূ শয়তান সম্পর্কে সতর্ক ও দূরে থাকতে হবে। পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে তাগিদ দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা : ২০৮)।

আল্লাহ স্বয়ং নিজেকে ইমানদারদের অভিভাবক হিসেবে ঘোষণা করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ইমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তিনি তাদের অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন। আর যারা কুফুরি করে, তাণ্ডত তাদের অভিভাবক। তারা তাদের আলো থেকে অন্ধকারের দিকে বের করে আনে। এরাই হলো অগ্নি অধিবাসী, সেখানেই তারা চিরকাল থাকবে।’ (সুরা বাকারা : ২৫৭)।

ইমানদার হতে হলে সব ক্ষেত্রে তার ভালোবাসা এবং শত্রুতার লক্ষ্য থাকতে হবে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তির ভালোবাসা ও শত্রুতা, দান করা ও না করা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই হয়ে থাকে, প্রকৃতপক্ষে সে-ই পূর্ণ ইমানদার। (সহি বুখারি)।

আল্লাহ মানুষকে ইমানের পথে আনার জন্য যুগে যুগে নবী-রসুল পাঠিয়েছেন। শেষ নবী হিসেবে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন ঘটেছে। তারপর কোনো নবীর আগমন ঘটবে না। আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো ওহি বা কিতাব নাজিল হবে না। ইমানদার হতে হলে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনা দীনের প্রতি ইমান আনতে হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সেই সত্তার শপথ যার হাতে মুহাম্মদের জীবন। এ উম্মতের যে কেউ চায় সে ইহুদি হোক বা নাসারা হোক আমার রিসালাতের কথা শুনবে, অথচ আমি যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছি তার ওপর ইমান না এনে মৃত্যুবরণ করবে, সে অবশ্যই জাহান্নামের অধিকারী হবে। (সহি মুসলিম)। ইমানের পথে থাকার জন্য মুমিনদের অনেক সময় দুঃখ-কষ্টের মুখোমুখি হতে হয়। বাহ্যিক দিক থেকে ক্ষতির সম্মুখীন হলেও প্রকৃত অর্থে যারা ইমানদার নয় তারাই ক্ষতির সম্মুখীন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘শপথ মহাকালের। নিশ্চয় সব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত; কিন্তু তারা ছাড়া, যারা! ইমান এনেছে, সৎ আমল করেছে এবং পরস্পর পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে ও পরস্পর পরস্পরকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দিয়েছে। (সুরা আসর : ১-৩)। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইমানে অটল থাকার তাওফিক দান করুন।  আমিন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর